দুর্গাপুর,৩ এপ্রিলঃ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এক ধাক্কায় চাকরী গেল ২৬ হাজার শিক্ষকশিক্ষিকার। ২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের গোটা প্যানেলই বৃহস্পতিবার বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট।কারণ সুপ্রিম কোর্ট আজ এই মামলার শুনানিতে জানিয়ে দিয়েছে, পুরো প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। রাজ্যের ২৬ হাজার চাকরি (প্রকৃত সংখ্যা ২৫,৭৫২) বাতিল করে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। তার সঙ্গে বিচারপতিদের এই বেঞ্চ জানিয়েছেন, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যাঁরা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের এসএসসি’র মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁরা চাইলে পুরনো কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন। এই ঘটনা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধীরা যথারীতি সরকারকেই দোষারোপ করেছে। তারা বলছে,নিয়োগে চরম দূর্ণীতিরই ফল ভুগতে হচ্ছে এখন। এনিয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও জানা যাচ্ছে শিক্ষা দফতরকে নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাকরী হারানো শিক্ষকশিক্ষিকাদের মধ্যে হাহাকার পড়ে গেছে। এদিকে, ২৬ হাজারের মধ্যে দুর্গাপুরের দুই নামী স্কুলের মোট ১২ জন শিক্ষকশিক্ষিকাও রয়েছেন বলে জানা গেছে। নেপালী পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের রয়েছেন ৮ জন শিক্ষক শিক্ষিকা এবং জেমুয়া ভাদুবালা হাই স্কুলের রয়েছেন ৪ জন। হটাৎ এভাবে শিক্ষিকশিক্ষিকার চাকরী চলে যাওয়ায় একদিকে যেমন দুই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নেপালী পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের ড.কলিমুল হক এবং ভাদুবালা স্কুলের জইনুল হক কিভাবে স্কুলের পড়াশোনা চলবে তা নিয়ে সংকটে পড়েছে। অন্যদিকে তেমনই চাকরী হারানো শিক্ষকশিক্ষিকারা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাদের প্রশ্ন কিভাবে সংসার চলবে তাদের? কলিমুল হক বলেছেন,এই স্কুলে ৪২০০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৩৩ জন। এরমধ্যে ৮ জনের চাকরী চলে যাওয়ায় স্কুল চালাতে বড় সমস্যার পড়তে হবে। অন্যদিকে ভাদুবালা স্কুলের প্রধান শিক্ষক জইনুল হক মনে করেন, শিক্ষকশিক্ষিকাদের কোনো দোষ নেই। যারা নিয়োগ করেছে সেই সরকারেরই এটা দোষ। সব মিলিয়ে একসঙ্গে এতোজন শিক্ষকশিক্ষিকার চাকরী চলে যাওয়ায় রাজ্যে সরকারী স্কুলগুলিতে পড়াশোনা রীতিমতো এক চরম সংকটের মধ্যে পড়বে বলেই মনে করছেন শিক্ষা মহল। দুর্গাপুরের শুধু নেপালী পাড়া হাই স্কুল ও ভাদুবালা স্কুলই নয়,এছাড়াও জানা গেছে বেনাচিতি হাই স্কুলের ৪ জন,সগড়ভাঙা হাই স্কুলের ৩ জন, ভিড়িঙ্গি টিএন স্কুলের ২ জন, দুর্গাপুর প্রজেক্ট টাউনশিপ গার্লস স্কুলের ৩ জন,দুর্গাপুর গার্লস হাই স্কুলের ৫ জন এবং দুর্গাপুর রাধারানী গার্লস হাই স্কুলের ৩ জনের চাকরী বাতিল হয়েছে।
২৬ হাজারের মধ্যে দুর্গাপুরের ৩২ জন শিক্ষকশিক্ষিকার চাকরী বাতিল
RELATED ARTICLES