নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ আবাস প্রকল্পে নির্মীয়মান বাড়িকে ঘিরেই শুরু হয়েছিল প্রতিবেশীর সঙ্গে গন্ডগোল। যে গন্ডগোল গড়িয়েছিল আদালতে। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল আবাস প্রকল্পে তৈরী বাড়ি ভেঙে ফেলতে হবে। সেই রাগেই চড়াও হয়ে প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে খুন করে উপভোক্তা। দীর্ঘ সময় পর আদালতের নির্দেশে আবাস প্রকল্পের সেই বাড়ি ভাঙার কাজে হাত লাগাল বাঁকুড়া পুরসভা। আর এই ঘটনাতেই ফের একবার উঠে এল আবাস প্রকল্প নিয়ে বাঁকুড়া পুরসভার বেনিয়মের ছবি। আবাস প্রকল্প নিয়ে এ রাজ্যে বেনিয়মের ছবি নতুন নয়। তবে সম্প্রতি বাঁকুড়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনচটি এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনার পর আবাস প্রকল্পে যে বেনিয়মের ছবি উঠে আসে তাতে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়তে হয় বাঁকুড়া পুরসভাকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নতুনচটি এলাকায় আবাস প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে উপভোক্তা পিন্টু রুইদাসের সঙ্গে বিবাদ বাধে প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মথুরামোহন দত্তর। অভিযোগ ওঠে মথুরামোহন দত্তর জায়গার একাংশ দখল করে আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরী করছিল উপভোক্তা পিন্টু রুইদাস। দুই প্রতিবেশীর বিবাদ গড়ায় আদালতে। গত ১৬ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট আবাস প্রকল্পে নির্মীয়মান বাড়িটি অবৈধ ঘোষণা করে দ্রুত সেই বাড়িটি ভেঙে ফেলার জন্য বাঁকুড়া পুরসভাকে নির্দেশ দেয়। এরপরই উপভোক্তা পিন্টু রুইদাসের যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়ে প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মথুরামোহন দত্তর উপর। গত ৩ ডিসেম্বর সেই রাগে উপভোক্তা পিন্টু রুইদাস ও তার পরিবার হামলা চালায় প্রতিবেশী মথুরামোহন দত্তের পরিবারের উপর। ধারালো অস্ত্রের কোপে মৃত্যু হয় মথুরামোহন দত্ত ও শ্রীধর দত্তর। বাঁকুড়া শহরে এই জোড়া খুনের ঘটনার পর আসরে নামে বিরোধী দলগুলি। আবাস প্রকল্পে পুরসভার বিরুদ্ধে স্বজন পোষণ ও নজরদারির অভাবের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে বাম ও বিজেপি। প্রবল অস্বস্তি ও চাপের মুখে পড়ে বাঁকুড়া পুরসভা শেষ পর্যন্ত আজ আবাস প্রকল্পে নির্মীয়মান বিতর্কিত বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করে। বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হলেও এতেও লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপির দাবি, যদি এই কাজ পৌরসভা অতি দ্রুততার সঙ্গে করতে পারতো সেক্ষেত্রে বেঁচে যেতে পারতো দুটি প্রাণ। পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে,অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে একই সঙ্গে। পৌরসভার আদালতের দেওয়ার নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করেছে। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যেই ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। পৌরসভার কোনরকম খামতি নেই বলেই দাবি তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া পৌরসভার উপ পৌর প্রধানের।
আবাস প্রকল্পের বাড়ি ঘিরে বিবাদেই জোড়া খুন,অবশেষে আদালতের নির্দেশে সেই বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু
RELATED ARTICLES