নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: “যারা গরিব মানুষের ঘরের টাকা, শৌচাগারের টাকা নিয়েছে তৃণমূলের ওই নেতাদের কাছে সব টাকা সুদে আসলে আদায় করব। আর টাকা না দিলে ওদের গ্রামছাড়া করব।” পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের রায়রামচন্দ্রপুর গ্রামে চা চক্রের আসরে এমনি হুঁশিয়ারি দিলেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় দিলীপ ঘোষ বলেন,” অনেকের কাছেই তৃণমূলের নেতারা টাকা নিয়েছে। কারা কত টাকা নিয়েছে তার তালিকা আমাকে দেবেন। ভোটের পর আমি এসে ওই নেতার কাছে টাকা আদায় করে আপনাদের হাতে ফেরত দেব। সব টাকা আদায় করব। গলায় গামছা দিয়ে চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড় করাব। প্রধান, এম এল এ যেই হোক প্রয়োজন হলে জমি বিক্রি করে ওদের টাকা ফেরত দিতে হবে।”
রবিবার ভাতারে ভোটপ্রচারে আসেন বিজেপির প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। সারাদিন ভাতারের বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগের মাহাতা পঞ্চায়েতের রায়রামচন্দ্রপুর গ্রামে চা চক্রের আসরে বসেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বক্তব্য রাখার সময় চাঁচাছোলা ভাষায় রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণ করেন। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেন।
দিলীপ ঘোষ বলেন,” সকাল থেকেই শুধু চোরের মুখ দেখো। বাটপারের মুখ দেখো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখও তাই। তার মুখ দেখে কেউ ভোট দেয় না। ” এদিন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের কীর্তি আজাদকে নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন,” আপনাদের গ্রামে তৃণমূলের প্রার্থী একবারও এসেছেন? আসবেন না। রোদে মুখ পুড়ে কালো হয়ে যাবে। ভোটে হেরে যাবে। সেজন্য বিহার চলে গিয়েছে।” পাশাপাশি রায়রামচন্দ্রপুর গ্রামে দাঁড়িয়ে এও বলেন,” আপনাদের গ্রামে কোনও এম পি আজ পর্যন্ত এসেছেন? আসেননি। আমি মেদিনীপুরের এম পি। ৪ জুনের পর বর্ধমানের এম পি হব। ৪ তারিখের পর আবার আসব।” দিলীপের হুঁশিয়ারি ,” ৪ তারিখের পর হিসাব হবে। যারা এখন চমকাচ্ছে, ভয় দেখাচ্ছে তাদের দেখে নেওয়া হবে। কোনও মিলেটারি লাগবে না। আমি আছি আর আমার কর্মীরা আছে। যারা টাকা খেয়েছে, সব উসুল হবে। হয় টাকা ফেরত দিতে হবে। না হলে জেলে যেতে হবে।” এরপর তিনি বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। জিটি রোডের ধারে কার্জনগেট সংলগ্ন জায়গায় দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করার পর তিনি বলেন, সন্দেশখালিতে আন্তর্জাতিক যড়যন্ত্র হয়েছে, যার তার জুড়ে আছে বাংলাদেশের মাধ্যমে। আর শাহজাহান রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে জেলা পরিষদের টাকায় ক্যাম্প করেছে। শাহজাহানের সম্পত্তি বেড়েছে। এবার সব বেরিয়ে আসবে। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে একজন বিজেপি কর্মী দিলীপ ঘোষের হাতে একটি লাঠি তুলে দেন।
এখানে উল্লেখ্য সপ্তাহ খানেক আগে দিলীপ ঘোষের জন্মদিনে একজন বিজেপি কর্মী তাকে একটি কলম দিলে, সেদিন তিনি বলেছিলেন কলম নয় একটি লাঠি দিলে ভালে হত। তারই পরিপেক্ষিতে এদিন সন্ধ্যায় নতুন দলীয় কার্যালয়ে দিলীপ ঘোষের হাতে লাঠি তুলে দেওয়া হয়। তবে লাঠি নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, এই লাঠি যেন ব্যবহার না করতে হয়।
দিলীপের হুঁশিয়ারি, ‘যারা গরীব মানুষের ঘরের, শৌচাগারের টাকা নিয়েছে সেই টাকা সুদে আসলে আদায় করব’
RELATED ARTICLES