সংবাদদাতা,দুর্গাপুর,১১ মেঃ চাকরী করাকালিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তাকে জীবনে প্রতিষ্ঠা করাই থাকে একজন পিতার মুখ্য দায়িত্ব। কিন্তু,দুর্ভাগ্য যে জীবনে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর ঘরসংসার করে সেই সন্তান যখন আর বাবা মায়ের দিকে ফিরেও তাকান না,সেটাই হয়ে ওঠে পিতামাতার কাছে এক বড় অভিশাপ। আর সেই অভিশাপেরই শিকার হলেন দুর্গাপুরের অভিজাত এলাকা সিটি সেন্টারের বাসিন্দা সেইলের এএসপি কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুবোধরঞ্জন আচার্য(৮১)। রবিবার সিটি সেন্টারের মধুসূদন পথ এলাকার একটি দোদলা বাড়ির বারান্দা থেকে উদ্ধার হল এক বৃদ্ধের মৃতদেহ।প্রায় ২১ বছর আগে তিনি অবসর নিয়েছেন। বছর ৯ আগে মারা গেছেন স্ত্রীও। চাকরী সূত্রে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ছেলে মুম্বইতে থাকেন। তার বাবার কাছে আসার সময় হয় না। ফলে মাসের পর মাস,বছরের পর বছর সিটি সেন্টারের দোতলা বাড়িটিতে একাই থাকতেন সুবোধবাবু। তাকে দেখভাল করার জন্য অর্চনা ঘোষাল নামে এক পরিচারিকা ছিলেন। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই নাকি ওই বৃদ্ধের ছেলে বাবার খাওয়া দাওয়া ও চিকিৎসা বাবদ টাকা পাঠাতেন। পরিচারিকা জানিয়েছেন তিনি হোটেল থেকে নিয়মিত খাবার এনে ওই বৃদ্ধকে খাওয়াতেন। ওই বৃদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ সেকথা ফোনে তার ছেলেকে বলা সত্বেও সে একদিনের জন্যও আসেনি বলে জানিয়েছে ওই পরিচারিকা।প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গেছে,স্ত্রী চলে যাওয়ার পর থেকেই সুবোধবাবু আরও একা হয়ে পড়েন। মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন।ইদানিং মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছেন। কয়েকবার প্রতিবেশীরাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। রবিবার প্রতিবেশীরা বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। চরম অমানবিক এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বৃদ্ধের সন্তানের এই ধরনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। পাশাপশি,পরিচারিকার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যে টাকা পাঠানো হতো,তা কি ঠিকভাবে খরত করত ওই পরিচারিকা? জানা গেছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে ফের ফাঁকা বাড়িতে অসহায় বৃদ্ধের মৃত্যু
RELATED ARTICLES