নিজস্ব সংবাদদাতা,বর্ধমান,৩১ মার্চঃ ফের বিতর্ক তুঙ্গে তুললেন বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। সোমবার থেকে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রচারে নামতে চলেছেন। আর এদিন তাঁকেই কটাক্ষ করলেন দিলীপ। তিনি এদিন বলেন, প্রচারে এত দিন ধরে নামেননি কেন, সেটা তো আগে জিজ্ঞেস করুন। আর মাথার স্টিকারটা কবে খুলবেন,ভোট শেষ হওয়ার আগে না ভোটের পরে? দিলীপ ঘোষ বলেন,হয়তো এটাই ভোটের পলিসি। ভোটের আগে চোট–এটাই তো ভোটের রেসিপি। হাত,পা ভাঙবে,মাথা ভাঙবে,কোথাও না কোথাও চোট লাগবেই। এ বার আর আবেগের (ইমোশোনাল) ভোট হবে না। রবিবার সকালে বর্ধমানের মোহনবাগান মাঠ এলাকায় প্রাতঃভ্রমণে বের হন দিলীপ ঘোষ। এরপর সেখান থেকে তিনি চলে আসেন রাজবাড়ির লক্ষ্মীনারায়ণ জীউ মন্দিরে। সেখান থেকে জহুরী পট্টিতে যান। এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, নির্মীয়মান বাড়ি ভেঙ্গে আবার একজন মারা গেছেন। যতদিন না এই সরকারটা ভেঙে পড়ছে,ততদিন বাড়ি ভাঙতে থাকবে। কারণ এই যে কাটমানি খেয়ে, ঘুষ দিয়ে, পুরনো বাড়িতে লোককে রেখে তাদের জীবনকে সংকটে রাখা হয়েছে, যে দুর্ঘটনা হচ্ছে তার দায় কে নেবে? কটা টাকা দিয়ে দিলে হয়ে যাবে? এই সরকারের হাতে আর কিছু নেই, কিছু করতে পারবে না ওরা,এই ভাবেই চলতে থাকবে। যে কোন ঘটনাই মানুষ দিন দশের মধ্যে ভুলে যায় বলে মালা রায়ের বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হ্যাঁ,উনি সেই কল্পনাতেই থাকুন,উনি সারা জীবন মনে রাখবেন এমন রেজাল্ট করবেন এবারে। অপরদিকে,তাঁকে হারানোর জন্য বিজেপির একাংশ নির্দেশ পাঠিয়েছে তৃণমূলে কুণাল ঘোষের এই বক্তব্যে দিলীপবাবু বলেন,কুনাল ঘোষ টিএমসিটা নিয়ে ভাবুন,পার্টিটা উঠে যাচ্ছে। এবারে কোন পার্টিটায় জয়েন করবেন ঠিক করে রাখুন। যে নিজের পদ চলে গেছে, যাকে গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল। বিজেপি নিয়ে ভাবার অনেক লোক আছে,সারা দেশ ভাবছে বিজেপিকে নিয়ে। মোদির মতো নেতা আছে। আর দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে ওরা কিছু করতে পারেনি,অন্য কারো কিছু করতে পারবে না। কীর্তন অনুষ্ঠানে সৌগত রায়ের নাচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,নেচে নিন। শেষ ইলেকশন তো। চার যুগের পর রিটায়ার্ড হয়ে যাবেন। অপরদিকে, এদিন উত্তরফটকে চা চক্রে বিদায়ী বিজেপি সাংসদ অহলুওয়ালিয়া কথা দিয়েও কাজ করেন নি বলে দিলীপ ঘোষকে কাছে পেয়ে ক্ষোভের কথা জানান স্থানীয় এক বাসিন্দা। এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েন তিনি। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে সেখানেই বর্ধমানের তেজগঞ্জের বাসিন্দা মধুসূদন দে দিলীপ ঘোষকে উদ্দেশ্য করে বলেন বর্ধমানের ১৯ নং জাতীয় সড়কের তেজগঞ্জে আন্ডারপাসের জন্য তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহলে আবেদন করা হলেও কাজ হয়নি। এমনকি প্রাক্তন সাংসদ অহলুওলিয়াকে জানানোর পর তিনি কথা দিলেও কাজ হয়নি।এর ফলে ওই এলাকায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ জনেরও বেশী মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই তিনি আবেদন করেন বিষয়টি একটু দেখুন। জনসংযোগে বেড়িয়ে তারই পূর্বসূরীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ শুনে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন দিলীপ ঘোষ। দিলীপবাবু জানান, বিভিন্ন সমস্যা আছে, জাতীয় সড়কে নিচে আন্ডারপাস চাই, জনসংখ্যা বাড়ছে, অনেক জায়গায় হচ্ছে বাকি গুলিও হবে,সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। অপরদিকে, নতুন পুরনো কর্মীদের মধ্যে বিরোধ সম্পর্কে তিনি জানান, অনেকেই আসছে, প্রচার তো শুরুই করিনি আমি। আমি দেখা করছি সেইসব কর্মীদের সাথে গিয়ে,কাল ভাতারে গেছিলাম,আজ গলসি যাবো। আমি জানি অনেকে অসুস্থ আছেন,অনেকে আহত আছেন, হাত-পা ভেঙে দিয়েছে মেরে, তাদের সাথে দেখা করছি আমি, যখন প্রচার শুরু হবে সব বেড়িয়ে পড়বে,ওরাই নেতৃত্ব দেবেন।
ফের মমতাকে নিশানা দিলীপের-‘মাথার স্টিকারটা কবে খুলবেন,ভোটের আগে না ভোটের পরে’?
RELATED ARTICLES