শেখ জয়উদ্দিন,১৩ ডিসেম্বরঃ বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকা বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসির কলকাতা আগমন ঘিরে তৈরী হয়েছিল ফুটবলপ্রমীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা। যার খেলা ঘরের টিভিতে দেখে মুগ্ধ হয়েছেন লক্ষ লক্ষ ফুটবলপ্রেমী,সেই মেসিকে একবার চোখের সামনে থেকে দেখার আশায় মোটা টাকা দিয়ে টিকিট কেটে যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হাজির হয়েছিলেন হাজার হাজার দর্শক। কিন্তু,মাঠের মাঝে মেসিকে ঘিরে এত ভিড় ছিল যে গ্যালারি থেকে তাকে দেখতেই পায়নি দর্শকরা। এই পরিস্থিতিতে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়তে থাকে দর্শকদের মধ্যে। অবশেষে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে যুবভারতীতে। জল ভর্তি বোতল মাঠ লক্ষ্য করে ছুঁড়ে মারা শুরু হয়। পরপর চেয়ার ছোঁড়া হ মাঠে। মেসির সমস্ত পোস্টার ছিঁড়ে মাঠের মধ্যেই ফেলা হয়। উদ্যোক্তা গোট ইন্ডিয়া ট্যুরের যত পোস্টার ছিল সব ছিঁড়ে ফেলা হয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন শয়ে শয়ে মানুষ। কেউ গোলপোস্টের জালও ছিঁড়ে নেন। রীতিমতো তান্ডব শুরু হয় যুব ভারতীয় সবুজ মাঠে। কিছুক্ষনের জন্য পুরো যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গন বেপরোয়া দর্শকদের দখলে চলে যায়। এরকম দৃশ্য আগে কখনও দেখা যায়নি এখানে। দর্শকদের অভিযোগ,এত টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও কেন মেসিকে দেখতে পেলাম না? আরও অভিযোগ,অনেকেই ব্ল্যাকেও টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি। মাঠের বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখে নির্ধারিত সময়ের আগেই মাঠ থেকে বের হয়ে যান মেসি। তাঁকে কনভয় করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সব মিলিয়ে মাত্র ১৮ মিনিট মাঠে ছিলেন বিশ্ব ফুটবলের এই মহাতারকা। মেসি মাঠে থাকাকালিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ গাঙ্গুলি, শাহরুখ খানের সেখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই মেসি বিদায় নিয়েছেন। দর্শকদের অনেকের বক্তব্য,আয়োজকদের চরম অপেশাদারিত্বের কারনেই এমনটা হল। কয়েক জন নিরাপত্তারক্ষীকে দিয়ে মেসিকে মাঠের চার দিকে কিছুক্ষন ঘোরালেই সকলে তাঁকে ভালো করে দেখতে পেতেন। এটা করা হলে দর্শকরা খুশি হতেন। তাহলে এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত। মেসি আগেও ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুবভারতীতে এসেছিলেন। সেবার তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে একটি ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন। দর্শকরা সেবার মেসিকে দীর্ঘক্ষন সামনে থেকে দেখেছিলেন। তার আগেও বিশ্ব ফুটবলের আরও এক মহাতারকা দিয়াগো মারাদোনাও এখানে এসেছিলেন। বেশ কিছুক্ষন তিনি মাঠের মাঝে বল নিয়ে তার কৌশল প্রদর্শন করেছিলেন। তা দেখে দর্শকরা উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। কিন্তু,শনিবারের যুবভারতীর দর্শকরা মেসির মতো মহাতারকাকে মন ভরে দেখতে না পাওয়ার ক্ষোভ আর দুঃখ নিয়েই বাড়ি ফিরলেন। সেই সঙ্গে এক চরম লজ্জার দিন রচিত হয়ে গেল গর্বের যুব ভারতীতে।
আয়োজকদের চরম অপেশাদারিত্বই যুবভারতীকে লজ্জার মুখে ঠেলে দিল
RELATED ARTICLES



