নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ জেলার সুনাম বজায় থাকলেও প্রত্যাশিত রেজাল্ট হলো না জেলা বাঁকুড়ায়। মাধ্যমিক হোক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক মেধা তালিকা প্রকাশ হলেই দেখা যায় বাঁকুড়া জেলার ছাত্রছাত্রীদের জয় জয়কার। মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী কিংবা বিরোধী দলনেতা সকলের মুখেই বারে বারে উঠে এসেছে বাঁকুড়ার মেধার সাফল্যের কাহিনী। এবারই প্রথম সেই সুনাম ধরে রাখতে পারলো না বাঁকুড়া জেলার ছাত্রছাত্রীরা। মাধ্যমিকে প্রথম ১০ স্থানাধিকারীদের মেধা তালিকায় স্থান করে নিতে পারলেই তারা কেউই প্রথম আটে জায়গা পেল না। বৃহস্পতিবার সকালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মেধা তালিকা ঘোষনা করতে দেখা গেলো তালিকায় বাঁকুড়া জেলায় ১ থেকে ১০ এর মধ্যে রয়েছে চারজন ছাত্রছাত্রী। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দেওয়া মেধা তালিকায় প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে রাজ্যের ৫৭ জন পরীক্ষার্থী। প্রথম দশের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ৮ জন,দক্ষিণ দিনাজপুর ৭ জন,পূর্ব বর্ধমান – ৭ জন,পূর্ব মেদিনীপুর ৭ জন,বাঁকুড়া ৪,মালদার ৪,পশ্চিম মেদিনীপুরের ৪ জন,বীরভূম থেকে ৩ জন,উত্তর ২৪ পরগনা ২ জন,নদীয়া ২ জন, ঝাড়গ্রাম ১,কলকাতা থেকে ১ জন, উত্তর দিনাজপুর ১ জন ছাত্রছাত্রী স্থান পেয়েছে।
মেধা তালিকায় নবম স্থানাধিকারী অরুনিমা চ্যাটার্জি বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী,তার প্রাপ্ত নাম্বর ৬৮৫। সৌভিক দত্ত,বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ছাত্র, ৬৮৪ নাম্বার পেয়ে দশম স্থান দখল করেছে। অন্যদিকে জঙ্গলমহলের ছাত্র যুগ্মভাবে দশম গড়রাইপুর হাইস্কুলের ছাত্র সৌম্যদীপ মন্ডলের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪। এছাড়াও তালডাংরা ফুলমতি হাইস্কুলের ছাত্র সৌমিক খাঁ ৬৮৪ নাম্বার পেয়ে দশম স্থান দখল করতে পেয়েছে। প্রত্যাশা থেকে বেশি নাম্বার পেয়ে খুশি মাধ্যমিকে নবম বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী অরুনিমা চ্যাটার্জী। বাঁকুড়ার মিলন পল্লী এলাকায় বাড়ি। সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। পড়াশুনা ছাড়া শুধু গান করা আর তেমন কোন শখ নেই অরুনিমার। সময় ধরে পড়াশোনা নয়,যখনই সময় পেয়েছে তখনই পড়াশোনা করেছে। এই সাফল্যের পিছনে তার বাবা মা ও স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের অবদান রয়েছে বলেই দাবি অরুনিমার। মাধ্যমিকে দশম বাঁকুড়ার জেলা স্কুলের ছাত্র সৌভিক দত্ত। বাড়ি বাঁকুড়ার মিশ্রপাড়া এলাকায়। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪। সৌভিকের দাবি ভালো পরীক্ষা হয়েছিল প্রত্যাশা মতই নাম্বার এসেছে। তবে প্রথম দশে স্থান পাবে এটা সে ভাবেনি। নিয়ম করে গড়ে প্রতিদিন ১০ ঘন্টা পড়াশোনা করেছে। ভবিষ্যতে পড়াশোনা করে চিকিৎসা হতে চায় সে। পড়াশোনা ছাড়াও অবসর সময়ে সে ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসে। ক্রিকেট অন্ত প্রান সৌভিকের প্রিয় খেলোয়াড় বিরাট কোহলি। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৮৪ নং পেয়ে দশম স্থান অধিকার করলো বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের গড়রাইপুর হাইস্কুলের ছাত্র সৌম্যদীপ মন্ডল।রাজ্য মেধা তালিকা ঘোষনা হতেই দেখা যায় দশম স্থান অধিকার করেছে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের গড়রাইপুর হাইস্কুলের ছাত্র সৌম্যদীপ মন্ডল।বাড়ি রাইপুর বাজার এলাকায়।তার দাবী এই ফলাফল প্রত্যাশিত ছিল। ৬টি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল, এর পাশাপাশি বাড়িতে দৈনিক পড়াশুনা করেই এই সাফল্য এসেছে। এই সাফল্য বাবা মা সহ সহ সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাকে উৎসর্গ করেছে সে।প্রিয় বিষয় গণিত আগামী দিনে চিকিৎসক হওয়াই তার লক্ষ্য তার। সৌম্যদীপ ও ক্রিকেট খেলতে ভালবাসে, তার প্রিয় খেলোয়াড় সুভমন গীল। ৬৮৪ নম্বর পেয়ে রাজ্য মেধা তালিকায় দশম বাঁকুড়ার সৌমিক, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সে।ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চাই মাধ্যমিকে দশম স্থান দখল করা সৌমিক খাঁ। বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহলের তালডাংরা এলাকার তালডাংরা ফুলমতি হাইস্কুলের ছাত্র সৌমিক। পাঁচ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দাদু,সেই থেকেই ভবিষ্যতে সৌমিক চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। প্রতিদিন গড়ে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা পাঠ্য বই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়ে সাফল্য সৌমিকের। ছবি আঁকতে ও কবিতা লিখতে ভালোবাসে সৌমিক।