নিজস্ব সংবাদদাতা,বর্ধমানঃ বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গ থেকে একাধিক মৃতদেহ গোপনে পাচার করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো বর্ধমান মেডিকেল কলেজ চত্বরে। এই ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে কার্যত কেউই মুখ খুলতে রাজী হননি। বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কৌস্তভ নায়েক ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। জানা গেছে, এদিন সকাল প্রায় ৮টা নাগাদ একটি স্বর্গরথে ওপরে একটি দেহ এবং স্বর্গরথের ড্রয়ারে আরও দেহ অথবা দেহাংশ পাচার করার চেষ্টা করা হয়। মেডিকেল কলেজের গেট পার হবার সময় সন্দেহ হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। এরপরই তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে সদুত্তর না পাওয়ায় গোটা বিষয়টি জানানো হয় কলেজের আধিকারিকদের। এরপর বর্ধমান থানায় জানালে পুলিশ গিয়ে আটক করে স্বর্গরথের চালককে। একইসঙ্গে স্বর্গরথের মালিক সহ মেডিকেল কলেজের ডোম এবং মেডিকেল কলেজের কর্মী সহ মোট ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই মৃতদেহগুলি বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গ থেকে উত্তরাখণ্ডে পাচার করা হচ্ছিল। কে কে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সহ গোটা বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র কৌতুহল। একইসঙ্গে এই ঘটনা আগেও ঘটেছে কিনা উঠেছে তা নিয়েও প্রশ্ন। খোদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ মনে করছেন এই ঘটনার সঙ্গে ওই বিভাগের কেউ কেউ যুক্ত না থাকলে এটা কখনই সম্ভব ছিল না। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এই মৃতদেহ পাচারের পিছনে কয়েক লক্ষাধিক টাকার চুক্তি হয়ে থাকতে পারে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কৌস্তভ নায়েক জানিয়েছেন,বিনা অনুমতিতেই পুলিশ মর্গ থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, চিকিত্সার উন্নতিকল্পে বহু মানুষ মেডিকেল কলেজকে তাঁদের দেহ দান করে যান। সেই সমস্ত দেহও নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে সংরক্ষিত থাকে এ্যানাটমি বিভাগেও। স্বাভাবিকভাবেই এভাবে মৃতদেহ পাচারের ঘটনা এদিন সামনে আসায় এর পিছনে বড়সড় চক্রের হাত রয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। এদিকে,পুলিশের হাতে আটক হওয়া স্বর্গরথের চালক সুমন মিত্রের মা রীতা মিত্র জানিয়েছেন,ছেলে এবং তাঁর স্বামী শম্ভু মিত্রকে পুলিশ আটক করেছে। আমি কিছুই জানিনা। ছেলে সাড়ে আটটায় বের হয়,স্বর্গরথ চালায়। স্বামী শম্ভু মিত্র অ্যাম্বুলেন্স চালায়,সকালেই বের হয়। আমি বাড়িতে থাকি,তাই কিছু জানি না। থানায় জানতে গিয়েছিলাম,আই সি-র সাথে দেখা হয়নি। কিছু জানতে পারিনি। তবে এই ধরণের ঘটনা ঘটা সম্ভব নয় বলে দাবী করেছেন রীতা মিত্র।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গ থেকে মৃতদেহ পাচার,ব্যাপক চাঞ্চল্য
RELATED ARTICLES