সার্থক কুমার দে,অন্ডালঃ গত ২৩ জানুয়ারি বাঁকোলা সুভাষ কলোনি সংলগ্ন জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় এতোয়ারী মিয়া (৫৯) নামে চনচনি কোলিয়ারির এক শ্রমিকের মৃতদেহ। মৃত খনিকর্মীর স্ত্রী মারিয়া বিবি সেদিন জানান ২১ জানুয়ারি বিকেলের পর স্বামী আর বাড়ি ফেরেনি। ২৩ জানুয়ারি ছেলে আব্দুল হাকিমকে সাথে নিয়ে মারিয়া বিবি উখড়া পুলিশ ফাঁড়িতে স্বামীর নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তার ঘন্টা তিনেক পরই জঙ্গল থেকে এতোয়ারী মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। যে অবস্থায় দেহটি উদ্ধার হয়েছিল তা দেখে তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যায় শ্বাসরোধের কারনে মৃত্যু হয়েছিল ওই ব্যক্তির। এরপর ২৭ জানুয়ারি মারিয়া বিবি স্বামীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন থানাতে। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জেরা করা হয় মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের। পুলিশ বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করে। তথ্যের সাথে নিহতের ছেলে হাকিমের বক্তব্যের অসংগতি থাকায় সন্দেহ বাড়ে তদন্তকারীদের। ৬ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারীদের টানা জেরাতে একসময় ভেঙ্গে পড়ে ছেলে হাকিম। স্বীকার করে সেই বাবাকে খুন করেছে। এরপরই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। কোর্টের নির্দেশে বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্ত হাকিম। আজ শনিবার অভিযুক্ত ছেলেকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে পুলিশ। করা হয় ঘটনার পুনর্নির্মাণ। চনচনী কোলিয়ারির পেছন দিকে যেখানে মৃত এতোয়ারী মিয়ার পরিবার থাকে সেখান থেকে শুরু হয় ঘটনার পুনর্নির্মাণ। একটি জায়গা দেখিয়ে অভিযুক্ত বলেন, সেদিন সন্ধ্যেবেলায় বাবা এতোয়ারী মিয়া এখানে বসেছিল। সেখান থেকে এতোয়ারীকে টোটোতে চাপিয়ে চনচনি থেকে বাঁকোলা আসার রাস্তা ধরে বেশ কিছুটা আসার পর প্রধান রাস্তা ছেড়ে ডান দিকে জঙ্গলের ভিতরে বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়ে টোটো দাঁড় করায়। টোটো থেকে নামিয়ে সেখানে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে বাবাকে খুন করেছি বলে জানায় অভিযুক্ত ছেলে হাকিম। তারপর দেহটি গাছে বেঁধে সে টোটো নিয়ে বাড়ি ফিরে যায় বলে জানায়। গোটা পুনর্নির্মাণ পর্বটি ভিডিওগ্রাফি করা হয়।আর একমাস পর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল মৃত এতোয়ারী মিয়ার । কি কারনে বাবাকে খুন করল হাকিম এখন এই প্রশ্নটার উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীদের ।
খনিকর্মী খুনে অভিযুক্ত ছেলেকে দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করালো পুলিশ
RELATED ARTICLES