প্রণয় রায়,দুর্গাপুর,২৪ নভেম্বরঃ স্বাস্থ্যই সম্পদ, হেলথ ইস ওয়েলথ। প্রবাদটি অনেকেই অবহেলা করি। শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, অনেক সময় মানসিক স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এখনই সচেতন না হলে বেশ কিছু সাধারণ সংক্রমণ অনেক সময় মারাত্মক হতে পারে। অনেক সংক্রমণহীন রোগ যেমন ডায়াবেটিস,হাই ব্লাড প্রেসার,কোলেস্টেরল,থাইরয়েড, ক্যানসার ইত্যাদি রোগ নিঃশব্দ ঘাতক ও প্রাণঘাতী। একথা ঠিক অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ও রোগ নির্ণয় জরুরী। শুধুমাত্র প্রেসক্রিপশনে অসুখ সারে না। রোগ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য ওষুধ সেবন অত্যন্ত জরুরী। অনেকেই এ বিষয়ে অবহেলা করেন। ঠিক মতো ওষুধ সেবন করেন না। এর ফলে রোগ নিরাময় যথেষ্ট কঠিন হয়ে পড়ে। সঠিক সময় সঠিক ওষুধ সঠিক মাত্রায় সঠিক সময়ে সেবন করলে তবেই রোগ মুক্ত হওয়া যায়। অনেকে ডাক্তারের দেওয়া প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ পুরোপুরি সেবন না করে মাঝপথে বন্ধ করে দেন। ওষুধের কয়েকটি ডোজ খাবার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে গেলেই অনেকে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে অবহেলা করেন। আবার অনেকেই নিজের চিকিৎসা নিজেই করেন। কোন শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ওষুধের দোকান থেকে নিজের ইচ্ছে মতো ওষুধ কিনে সেবন করেন। এটা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশনের ওষুধ কোনটা কত মাত্রায় খেতে হবে ও কতদিন খেতে হবে তা বুঝিয়ে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব ফার্মাসিস্টদের। স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফার্মাসিস্টদের অপরিহার্য ভূমিকার কথা স্মরণ করে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার প্রধান হাসপাতালে এদিন ৬৩ তম জাতীয় ফার্মাসী সপ্তাহ পালন করল সেইল ও ইন্ডিয়ান ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বেঙ্গল ব্রাঞ্চের দুর্গাপুর চ্যাপ্টার। এ বছরের ফার্মাসি সপ্তাহের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘থিঙ্ক হেলথ থিঙ্ক ফার্মাসিস্ট’। অর্থাৎ স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা। ডিএসপি হাসপাতালে জাতীয় ফার্মাসি সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার প্রধান হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত চিফ মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রাজরঞ্জন কুমার, এডিশনাল সিএমও ডাঃ অসীম নারায়ণ বোস,ইন্ডিয়ান পর্ব এসোসিয়েশনের বেঙ্গল ব্রাঞ্চের সভাপতি ডাক্তার প্রবীর কুমার ব্যানার্জি,ডাঃ বিসি রায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ অফ ফার্মাসির অধ্যাপক শুভব্রত রায়,অধ্যাপক রণবীর চন্দ,দুর্গাপুর শাখার সভাপতি অনিমেষ গোস্বামী। স্বাগত ভাষণ দেন দুর্গাপুর চ্যাপ্টারের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবমাল্য চ্যাটার্জি। সম্মেলনে বিভিন্ন বক্তা বলেন,জাতীয় ফার্মাসি সপ্তাহের অন্তিম দিবসে সবাইকে মনে রাখতে হবে ফার্মাসিস্টরা রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজ করে। চিকিৎসকরা ওষুধ দেন কিন্তু তার ব্যবহার বিধি বুঝিয়ে দেন ফার্মাসিস্টরা। স্বাস্থ্য পরিষেবা সঠিকভাবে বজায় রাখতে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বক্তারা আরো বলেন, কোন কোন ওষুধ কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সে বিষয়ে চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শ রোগীদের সঠিকভাবে অবহিত করার দায়িত্ব ফার্মাসিস্টদের। চিকিৎসকের বিধান ছাড়া রোগীদের ইচ্ছেমতো ওষুধ সেবনের অপকারিতা ও ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়েও রোগীদের সুপরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব ফার্মাসিস্টদের। বক্তারা বলেন,রোগী ও ফার্মাসিস্টদের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা উচিত এর ফলে রোগী পরিষেবা অনেক সহজ হয়ে যায়।
দুর্গাপুরে জাতীয় ফার্মাসি দিবস উদযাপিত
RELATED ARTICLES