নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান, ২৩ এপ্রিল – নিজের মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে এবার পালটা দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করলেন বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদ। মঙ্গলবার হনুমান জয়ন্তীকে মাথায় রেখে বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিয়ে মনোনয়ন দাখিল করলেন কীর্তি। এদিনই কেন মনোনয়ন তা জানতে চাইলে কীর্তি আজাদ বলেন, দেখুন আমি মা কালীকে বিশ্বাস করি, সনাতন ধর্মে আমি বিশ্বাস করি। কোন ভালো কাজ করলে তিথি ঠিক করা হয়। বিয়ে হলে, উপনয়ন হলে, কোন দিন হবে, কোন সময় হবে ঠিক করা হয়। এখানে একটা বিশ্বাস আছে যেটা আমার মনে আছে। আমি মা কালীর উপাসক। দশম মহাবিদ্যায় বিশ্বাস করি। মা দুর্গা আমাদের জন্য একটা আদর্শ, মা কালী আদর্শ। যে সমস্ত লোকজনদের বাঁচানোর জন্য অবতার নিয়েছিলেন। এখন দিলীপ ঘোষের মতো লোক বলেন দুর্গার মা-বাবা কে? ওনার জানা উচিত, দুর্গা মায়ের অবদান হয়েছিল। উনি প্রকট হয়েছিলেন, প্রজা ও জনগণকে বাঁচানোর জন্য মহিষাসুরের থেকে। দিলীপ ঘোষও নিয়ম করে প্রতিদিন মন্দিরে যান। সেই বিষয়ে কীর্তি বলেন, মন্দির গেলে কেউ ধার্মিক হয়ে যায় না। ওনার আগে ধার্মিক হওয়া উচিত। যে মন্দিরে যায়, মসজিদে যায়, গুরুদুয়ারায় যায়, গির্জায় যায়, ওনাদের অন্যের ধর্মেও আস্থা, বিশ্বাস থাকা দরকার। তখনই মন্দির গিয়ে লাভ হবে। আমিও তো মন্দির থেকে ঘুরে এলাম। উল্লেখ্য, এদিন রীতিমত বাঙালিয়ানা পোশাকে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, বিধায়ক খোকন দাস, শ্রমিক নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতারা। এদিনের তাঁর এই বিশেষ পোশাক সম্পর্কে কীর্তি বলেন, বাংলার লোকও পড়ে আর আমরা মিথিলাতেও ধুতি, আর পাঞ্জাবি কুর্তা পরি। আমাদের এখানে কিছু উপনয়ন, বিয়ে হলে ধুতিতে হলুদ রং করে। এখানেও করে, আমাদের সংস্কার আর সংস্কৃতি একই। ত্রেতাযুগে রামায়ণ হয়েছিল সেই সময় মিথিলা ছিল। সেই সময় না দিল্লি ছিল, না ইউপি ছিল, না বাংলা ছিল, না উড়িষ্যা ছিল, না মহারাষ্ট্র ছিল না। ত্রেতাযুগে কি ছিল অযোধ্যা, মিথিলা, নন্দকাননের জঙ্গল, কিষ্কিন্ধ্যা, রামেশ্বরম, আর লঙ্কা। আমি বাংলা বলতে পারছি, কিন্তু আমি যখন বলছি তখন আমার মনে হচ্ছে আমি মৈথেলি বলে ফেলছি। তাই আমি চুপ করে যাচ্ছি। কিন্তু এখন আমি আস্তে আস্তে বলা শুরু করেছি, আমি তিন মাসের সময় চেয়েছিলাম কিন্তু তার অনেক আগেই আমি বলব। তিনি বলেন,বিধায়ক তো খুব ভালো। উনি আমাকে শেখাচ্ছেন আর আমি ওনাকে শেখাচ্ছি, অল্প অল্প সফল হয়েছেন। এস এস সি র রায় সম্পর্কে তিনি জানান, দেখুন অন্যায় হয়েছে। আমাদের সরকার এটা সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাবে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন। এটাকে নিয়ে যাবেন এটা অন্যায়। আপনি ভাবুন ১ লাখ, একটা পরিবারের ৬ টা করে লোক থাকলেও মা বাবাকে নিয়ে হলেও ১ থেকে ১.৫০ লাখ লোক সোজাসুজি প্রভাবিত হয়েছে, এই ভুল সিদ্ধান্ত থেকে। এদিনই দিলীপ ঘোষ দুর্গাপুরে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে ডুবে মরা উচিত, তারপর বলেছেন জলও পাবেন না উনি। এর প্রত্যুত্তরে কীর্তি বলেন, দিলীপ ঘোষের থেকে আপনি আর কি আশা করেন। যে লোকের মাথা খারাপ, যে জানে না কি বলছে। এখন বলছেন তৃণমূল লোকের সহানুভূতি খুঁজছে। আমরা ভাল কাজ করেছি, তাই লোক আমাদের সহানুভূতি দিচ্ছে। কিন্তু ওনাকে তো সহানুভূতি তো দূরের কথা কেউ ঢুকতেও দিচ্ছে না গো ব্যাক দিলীপ ঘোষ বলছে। বর্ধমানের গো ব্যাক বলছে, দুর্গাপুরে গো ব্যাক বলছে, যেখানে যাচ্ছে সেখানে গো ব্যাক বলছে। খবরে থাকার জন্য ভুলভাল বলেন। আমি আগেই বলেছি, পাগলে কিনা বলে,ছাগলে কিনা খায়।
মন্দিরে গেলেই ধার্মিক হওয়া যায় না, দিলীপকে কটাক্ষ কীর্তির
RELATED ARTICLES