সংবাদদাত,দুর্গাপুরঃ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মেলনী এর দুর্গাপুর ইস্পাত কমিটি প্রতিবারের মতো এ বছরও বিশেষভাবে সক্ষম ৫৫ জন পুরুষ ও মহিলাদের নিয়ে দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক ডঃ সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় এসবিএসটিসির একটি বাসে দুর্গাপুরের পুজো পরিক্রমায় বের হলো। ৫৫ জন বিশেষভাবে সক্ষম পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে পাঁচ জন দৃষ্টিহীন মানুষও ছিলেন। দৃষ্টিহীন পিংকি দত্ত জানান, প্রতি বছরই এই দিনটার জন্য তিনি অপেক্ষা করে থাকেন। নিজে দেখতে না পেলেও তার সহযাত্রী বন্ধুদের দৃষ্টিতে তিনি প্রত্যেকটি পুজোই অনুভব করেন ও উপভোগ করেন। লতিকা বর্মনের শরীরের নিম্নাংশ একদম অকেজো। উনি এলেন হুইল চেয়ারে বসে উনার বাড়ির কারো সহযোগিতায়। কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করতে বললেন, একটি দিন আমরা সব বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা এক জায়গায় হই। একসঙ্গে আনন্দে দুর্গাপুরের বড় বড় পুজো গুলো দেখতে যাই, যা কোনদিনও সম্ভব হতো না যদি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সমিতির দুর্গাপুর শাখা আমাদের এই ভ্রমণের ব্যবস্থা করত। ওনাকে যখন ধরে ধরে বাসে তোলা হলো বাসের মধ্যে বসে থাকা অন্যান্য বিশেষভাবে সক্ষম পুরুষ ও মহিলারা উল্লাসে করতালি দিলেন। ওরা দুর্গাপুরের বিভিন্ন বড় বড় দুর্গা পুজোগুলি দর্শন করলেন। এদের অনেকে প্রতিমা দেখতে বাস থেকে নামবেন আবার অনেকে বাসের জানালা থেকেই যতদূর সম্ভব পুজো প্যান্ডেল গুলো দর্শন করবেন। দুর্গাপুর শাখার সম্পাদক গৌতম ঘোষ নিজেও একজন প্রতিবন্ধী। উনি জানালেন, তারা সারা বছর ধরেই প্রতিবন্ধীদের জীবনের বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতা দূর করতে প্রচুর কর্মসূচি নিয়ে কাজ করেন। প্রচুর মানুষ ও সংস্থা ওদের বিভিন্ন রকম সহায়তা করেন। মহাসপ্তমীর দিন সকালে পুজো পরিক্রমার এই বাসটি যাত্রা শুরু করে বেনাচিতির পাঁচ মাথার মোড় থেকে। যাত্রা শুরুর সংকেত দিলেন এই সংস্থার অন্যতম শুভানুধ্যায়ী ডিএসপি হাসপাতালের এজিএম ফিজিওথেরাপি ডঃ তপন বাদ্যকর। উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী প্রণয় রায় সহ অন্যান্যরা। সপ্তমীর দিন দুর্গাপুরের বিশেষ বিশেষ পুজো মণ্ডপ দর্শনের পর ওরা সবাই রিকল পার্কের আবাসিক আরতি মাহাতার পারিবারিক পূজোয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন বলে জানান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মেলনীর দুর্গাপুর ইস্পাত শাখা সম্পাদক গৌতম ঘোষ।

