নিজস্ব প্রতিনিধি,দুর্গাপুরঃ বাংলার উৎসবগুলির মধ্যে অন়্যতম হল রথযাত্রা। প্রতি বছর আষাঢ় মাসে এই রথযাত্রা ঘিরে বাঙালির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়। শহর দুর্গাপুরও তার ব্যাতিক্রম নয়। এই শহরে সারা বছর যেকটি উৎসব ঘিরে দুর্গাপুরবাসী মেতে ওঠে তারমধ্যে অন্যতম হল রথ উৎসব। ইস্পাতনগরীর চিত্রালয় ময়দানে বিগত চার দশক ধরে আয়োজন হয়ে আসছে রথের মেলা। এখানে বিভিন্ন জেলা এবং অন্যান্য রাজ্য থেকেও ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা নিয়ে মেলায় আসে। থাকে বইমেলাও। আজ থেকেই শুরু হয়ে গেল সেই রথ উৎসব। রথযাত্রা মানেই দুর্গাপুরের চিত্রালয়ের মেলা। দুর্গাপুরের ইস্পাত নগরীর রাজেন্দ্র প্রসাদের জগন্নাথ মন্দির থেকে রথে চাপিয়ে প্রভু জগন্নাথ,সুভদ্রা, বলরমকে নিয়ে যাওয়া হয় চিত্রালয়ের মাঠে অস্থায়ী মাসীর বাড়িতে। ৭দিন ধরে সেখানেই চলে পুজোপাঠ, নানান অনুষ্ঠান। চলে ১৫ দিন ধরে রথের মেলা। কাতারে কাতারে মানুষের সমাগম হয় জেলার অন্যতম এই রথের মেলায়। মেলায় বইমেলা মানুষের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। এই মেলায় যেহেতু ব্যাপক সংখ্যায় মানুষের ভিড় হয় তাই সজাগ থাকতে হয় প্রশাসনকে। বিগত সময় দেখা গেছে ভিড়ের মধ্যে কারোর মোবাইল, মানি ব্যাগ আর সোনার অলংকার চুরির মতো ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েকবছরে চোরদের উপদ্রবে মাথায় হাত পড়েছিল দর্শনার্থীদের মাথায়। তাই এবার যাতে এই সব অবাঞ্ছিত ঘটনা আর না ঘটে তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেলার মূল রাস্তাতেও বহু ছোট ছোট দোকান বসার জেরে ভিড় বাড়লে নিয়ন্ত্রণ করতেও হিমহিম খেতে হয় পুলিশকে। তবে এবার আগাম তৎপরতায় নেমেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই মেলা শুরুর আগেই দুর্গাপুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি দুর্গাপুর সুবীর রায় মেলা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, “এবার গোটা মেলার চতুর্দিকে সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ড্রোনে নজরদারি চলবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কয়েকটি ব্যারিকেট করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হচ্ছে। আর যেসব দোকান রাস্তায় বসেছিল তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় সরানোর জন্য মেলা কমিটিকে বলা হয়েছে। যেসব দোকানগুলিতে গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে সেসব দোকানের অগ্নিনির্বাপক ব্যাবস্থাও খতিয়ে দেখা হয়েছে। মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার মুখার্জি বলেন,এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ বইমেলা। সেই বই মেলায় শুধু পশ্চিম বর্ধমান জেলার মানুষই আসে না রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বইপ্রেমী মানুষের সমাগম হয়। প্রচুর দর্শনার্থী আসে গোটা মেলায়। আমাদের ভলেন্টিয়ারদের পাশাপাশি পুলিশও সহযোগিতা করবে। উল্লেখ্য,চিত্রালয় ময়দানের ঐতিহ্যের রথের মেলার পাশাপাশি ইস্পাতনগরীর আকবর রোডেও ইসকনের পক্ষ থেকে রথের মেলা আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেও পুলিশের তরফে নিরাপত্তার সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দুর্গাপুর থানা সূত্রে জানা গেছে।
