সংবাদদাতা,অন্ডালঃ খনি অঞ্চলের উখরা গ্রামে তেওয়ারি পাড়ায় প্রথা মেনে আজও প্রচলিত রয়েছে পটের দুর্গা পুজো। পুজোটি এলাকায় ব্যানার্জী বাড়ির পুজো বলেই পরিচিত। প্রায় ৩৫০ বছর আগে এই পুজোটির সূচনা হয়। সূচনাকালে পুজোটি ছিল স্থানীয় ভট্টাচার্য পরিবারের। কত বছর আগে কে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন তার অবশ্য লিখিত কোন দলিল বা ইতিহাস কারো জানা নেই। ভট্টাচার্য পরিবারের শেষ পুরুষের কন্যা সন্তান থাকলেও কোনো পুত্র সন্তান ছিল না। অ-পুত্রক হওয়ার কারণে ভট্টাচার্য বাবুর মৃত্যুর পর তার কন্যার সন্তান রামধন ব্যানার্জী, মামার বাড়ির এই পুজোটির দায়িত্ব নেন। তখন থেকে এটি ব্যানার্জী বাড়ির পুজো বলে পরিচিত হয়। আট পুরুষ ধরে এই পুজো আয়োজন করে আসছে ব্যানার্জী পরিবারের সদস্যরা। তেওয়ারি পাড়ায় তিন কালিতলার বিপরীতে রয়েছে ব্যানার্জী পরিবারের মা দুর্গার সুসজ্জিত মন্দির। মন্দিরের দেওয়াল জুড়ে আঁকা সপরিবার মা দুর্গার পটের মূর্তি। প্রতিবছর পুজোর আগে মূর্তির পুরনো ছবি মুছে নতুন করে পটের মূর্তি আঁকা হয়,এটাই ব্যানার্জী পরিবারের পরম্পরা। এই পুজোতে সূচনাকাল থেকেই তিনটি ছাগ বলির প্রথা প্রচলিত রয়েছে। অষ্টমীর দিন একটি ও নবমীর দিন দুটি ছাগ বলি হয়। সাদা রঙের ছাগ বলি হয় অষ্টমীর দিন। এই পরম্পরা চলে আসছে পুজোর সূচনা কাল থেকে,বলে জানান ব্যানার্জী পরিবারের সদস্য মলয় ব্যানার্জী, স্বর্ণপ্রসন্ন ব্যানার্জীরা । তবে করোনা অতিমারির সময়কালে ব্যানার্জী পরিবারের পুজোয় কোন ছাগল বলি দেওয়া হয়নি। দু’বছর যেহেতু ছাগ বলি হয়নি তাই বলিদান প্রথা বরাবরের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মলয়বাবু, স্বর্ণপ্রসন্ন বাবুরা। মা দুর্গার নিজস্ব দেবত্ব সম্পত্তি রয়েছে। সেই সম্পত্তি থেকে আয়ের টাকাতেই পুজোর সমস্ত আয়োজন করা হয় বলে জানান তারা। মলয়বাবু,স্বর্ণপ্রসন্ন বাবু-রা চার ভাই,পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭৪ জন। ব্যানার্জী পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে কর্মসূত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন সুদূর আমেরিকা, মুম্বাই, কলকাতা ও উখরায় পৈত্রিক ভিটেতে। পারিবারিক পুজোতে অংশগ্রহণ করতে সকলেই উখরার বাড়িতে আসেন প্রতিবছর। পুজোর চার দিন রান্নাবান্না,খাওয়া, আড্ডা সবই হয় একসাথে।
প্রথা মেনে ব্যানার্জী বাড়িতে আজও হয় পটের দুর্গাপুজো
RELATED ARTICLES