নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুর: আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের পর এবার কি বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনেও আর এক বিহারীবাবুকে প্রার্থী করতে চলেছে তৃণমূল? ১৯৮৩’র বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য কীর্তি আজাদের হটাৎ দুর্গাপুরে আগমন এবং তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীর তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা সেই বার্তাই দিচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। প্রথমে বিজেপি তারপর কংগ্রেস,দু বার দল বদল করে এখন তৃণমূল কংগ্রেসে রয়েছেন ১৯৮৩ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। বিহারে জন্ম হলেও দীর্ঘদিন তিনি দিল্লী বাসী। ২০২১ সালে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মূলত গোয়া রাজ্যেই তৃণমূলের সংগঠনের কাজে যুক্ত ছিলেন। তবে এবার দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে বাংলায় তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করতে চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার কীর্তি দিল্লী থেকে অন্ডাল বিমান বন্দরে নামেন। তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর লাহা, প্রাক্তন কাউন্সিলার স্বরুপ মন্ডল ও সুষ্মিতা ভুঁই, মণি দাসগুপ্ত সহ শাসকদলের কয়েকজন সদস্য। এরপর আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে তৃণমূলের এক সভায় তিনি যোগ দেন এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে আসানসোলের ঘাগরবুড়ি মন্দিরে পুজো দেন। মঙ্গলবার তিনি চলে আসেন দুর্গাপুরে। ইস্পাত নগরীর শিবাজী রোডে দুর্গাপুর ক্রিকেট ক্লাবে ব্যাট হাতে নেমে পড়েন। বেশ কয়েকটি ছয় ও চার মারেন। এখানে কিছুটা সময় কাটান শিক্ষানবিশ ক্রিকেটারদের সঙ্গে এবং তাদের উৎসাহিত করার জন্য কিছু পরামর্শ দেন। তার সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার,পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। এখানে কীর্তি আজাদকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, আপনি কি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন? উত্তরে তিনি বলেন, ১০ মার্চ ব্রিগেডে জনগর্জন সভায় মানুষকে আহ্বান করতে দুর্গাপুরে এসেছেন। তবে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী কীর্তি আজাদই হবে এমন জল্পনা রয়েছে তুঙ্গে। কীর্তি আজাদ বলেন,”কপিল দেবের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের জন্য বিশ্বকাপ জয় করেছি। এবার আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেডে জনগর্জন কর্মসূচিতে মানুষকে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানাতে এসেছি। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদীর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি সবার কাছে ওইদিনের সভায় জানাব বলে এসেছি। তার কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল,
কদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুদিন বাংলা সফরে এসে বলেছেন তিনি এ রাজ্যের ৪২ টি আসনের মধ্যে ৪২ টি পাবে বিজেপি। সেই বিষয়ে কীর্তি আজাদ বলেন, সে তো ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন প্রত্যেক মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১৫ লক্ষ টাকা। দু কোটি বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। গ্যাসের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেইসব প্রতিশ্রুতি কি মিলেছে? তিনি আরও বলেন,ওরা তো ২০২১ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ২০০র বেশি আসন পাবে বলেছিল বাংলায়। কিন্তু ১০০টি ও আসন পাইনি তাঁরা। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের কাজ করেন। তিনি তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও মানুষ জবাব দেবে বলেও জানান তিনি। আপনি কি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন? এর জবাবে সরাসরি কিছু না বলে তিনি জানান, ব্রিগেডে জনগর্জন সভায় মানুষকে আহ্বান করতে দুর্গাপুরে এসেছেন। বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী কি কীর্তি আজাদই? এবিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন চক্রবর্তী ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারও সরাসরি কিছু বলতে চান নি। তবে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা ১০ মার্চ ব্রিগেডের জনগর্জন সভাতেই তৃণমূল সুপ্রিমো দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবেন এবং সেখানেই হয়ত বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনের জন্য কীর্তি আজাদের নামও ঘোষণা হতে পারে।
আসানসোলের পর এবার কি বর্ধমান দুর্গাপুর আসনেও আর এক বিহারীবাবু?
RELATED ARTICLES