নিজস্ব প্রতিনিধি,দুর্গাপুর,২৮ আগস্টঃ বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টার বাংলা বনধ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিল দুর্গাপুরে। বনধের প্রচারে বের হয়ে বেনাচিতিতে তৃণমূল কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হলেন বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই এবং বিজেপি নেতা পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়। লাঠি দিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বনধ ব্যর্থ করতে রাস্তায় নামা তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। পুলিশের সামনেই এই সব ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। উল্লেখ্য,গতকাল আর জি কর কান্ডের জেরে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামে একটি সংগঠন। নবান্ন অভিযান ঘিরে কলকাতায় ধুন্দুমার কান্ড ঘটেছে। আন্দোলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে দফায় দফায় কাঁদানো গ্যাসের সেল ফাটাতে হয়,ব্যবহার করতে হয় জল কামানও। নজীরবিহীন নিরাপত্তা ও ব্যারিকেড দিয়ে গোটা শহর ঘেরা থাকা সত্বেও ছাত্রদের নবান্ন অভিযান আটকাতে পুলিশকে হিমসিম খেতে হয়। এমনকি কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করার পাশাপাশি আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জও করে। ছাত্রদের উপর পুলিশের অত্যাচারের অভিযোগ তুলে গতকাল বিকেলের দিকেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বুধবার ১২ ঘন্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছিলেন। সেই মতো এদিন সকাল থেকেই রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় নেমে পড়েন বনধ সফল করার লক্ষ্যে। অন্যদিকে দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাও রাস্তায় নেমে দোকান পাট খুলে রাখতে জোর করেন। জেলার বাস সার্ভিস বন্ধ না হয় তাই দুর্গাপুর স্টেশনের বাঁকুড়া মোড়ে ভোর থেকে দলীয় পতাকা কাঁধে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা পথে পাহারায় নামে। স্থানীয় কাউন্সিলর সিপুল সাহার নেতৃত্বে ক্যাম্পেনিং চলে। দোকানদারদের দোকান খুলতে রাস্তায় তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিল টহল দেয়। দুর্গাপুর বাজারে বিজেপির দলীয় কার্যালয় বন্ধের দাবিতে তৃণমূল বিক্ষোভ দেখালে সেখানে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবস্থা সামাল দেয় কোকওভেন থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। দুর্গাপুরের মায়া বাজারে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মিছিল মুখোমুখি হতেই দুই পক্ষে বচসা গালাগালি শুরু হয়। শেষমেশ পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। বনধের সমর্থনে পানাগড় বাজারের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বিজেপি নেতা রমন শর্মার নেতৃত্বে চলে অবরোধ। পুলিশ অবরোধ হটাতে এলে রাস্তায় শুয়ে পড়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। পুলিশের সাথে শুরু হয় বচসা। কাঁকসা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে অবরোধ তুলে দেয় এবং বিজেপির বেশ কয়েকজনকে আটক করে। এদিকে এদিন বিজেপির সমর্থকরা দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার টিকিট কাউন্টারে ভাংচুড় চালায় বলে অভিযোগ। কোক ওভেন থানার পুলিশ গিয়ে তাদের হটিয়ে দেয়। তবে,দুর্গাপুরে বনধের বড় কোনো প্রভাব পড়েনি। কলকারখানা,অফিস আদালতে উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। খনি এলাকাতেও বনধের প্রভাল পড়েনি। রেল পরিষেবাও ছিল স্বাভাবিক। তবে কিছু রুটে বাসের সংখ্যা অন্যদিনের তুলনায় কম ছিল। বেশিরভাগ এলাকায় দোকাটপাট খোলাই ছিল।
বনধ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দুর্গাপুরে,বিজেপি বিধায়ককে লাঠিপেটার অভিযোগ
RELATED ARTICLES