সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ দুর্গাপুরের শ্রমিক সংগঠনে বড় ধরনের রদবদল করে ফেললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রদবদল যে হবে তার ইঙ্গিত অনেক আগেই দিয়েছিলেন তিনি। এক সভায় দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও প্রদীপ মজুমদারকে তিনি পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন এবার জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি বদল করা হবে। বাস্তবে দেখা গেল জেলা শ্রমিক সংগঠনকে না ভেঙেই ঘোষণা করা হল ১২ জনের নতুন একটি কোর কমিটি। জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটককে আপাতত সরানো না হলেও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের কোর কমিটিতে তাকে রাখা হয়নি। অভিজিৎ ঘটক ছাড়াও এই কমিটিতে স্থান হয়নি প্রাক্তন জেলা সভাপতি শ্রমিক নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়,বর্তমান জেলা কমিটিতে থাকা দীপঙ্কর লাহারও। এমনকি সিপিএম থেকে তৃণমূলে আসা নেতা পঙ্কজ রায় সরকারকে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে শোনা গেলেও,তাকেও নেওয়া হয়নি কোর কমিটিতে। অথচ, আইএনটিটিউসির বিভিন্ন মিছিল ও সভায় তাকে দেখা গেছে। আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোর কমিটির চেয়ারপার্সেন করে মোট ১২ জনের যে কোর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে বাকি ১১ জন হলেন- মানস অধিকারী, রাজেশ কোনার, ভুবনেশ্বর মুখোপাধ্যায়, সুশান্ত রায়, লিটন সরকার, অভিষেক দে, হরদীপ সিং, দেবব্রত কেশ, পূর্ণনন্দ চট্টোপাধ্যায়, সেখ আমিনুর রহমান এবং আকবর আলি। এবার বাড়তি দায়িত্ব পাওয়ার পর এই কোর কমিটির চেয়ারপার্সেন তথা শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার হলদিয়া এবং বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে কোর কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। কোর কমিটি গঠন প্রসঙ্গে ঋতব্রত বলেছেন, ‘‘দল যখন দায়িত্ব দিয়েছে, সেই দায়িত্ব পালন করতেই হবে। আমি সাধারণত মাসে দু’বার করে তমলুক এবং দুর্গাপুরে সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখতে যেতাম। কিন্তু দল আমাকে কোর কমিটির মাথায় বসানোর পর মাসে তিন বার করে সেখানে সাংগঠনিক কাজকর্ম করতে যেতে হবে।’’ দুর্গাপুরের ২টি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের ভোট কম থাকার কারনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার তার বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। ২০২১ সালের নির্বাচনে দুর্গাপুর পূর্ব থেকে প্রদীপ মজুমদার জিতলেও দুর্গাপুর পশ্চিমে তৃণমূলকে হারিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ বর্ধমান দুর্গাপুর আসনটি বিজেপির থেকে কেড়ে নিলেও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল তথা পুরসভা এলাকার বেশির ভাগ ওয়ার্ডেই পিছিয়ে আছেন। এই ফলাফলের জন্য দলের শ্রমিক সংগঠনের প্রতি একাধিকবার নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে ২০২৬ বিধানসভার আগে দুর্গাপুরের জন্য এই কোর কমিটি গঠন কতটা কাজে আসে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে দুর্গাপুরের তৃণমূলী রাজনীতিতে। কোর কমিটিতে স্থান পাওয়া কয়েকজনের নাম নিয়েও অবাক হয়েছেন এখানকার শ্রমিক মহলের একটা অংশ। তারা কতটা যোগ্য তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে, জেলা তৃণমূলের সভাপতি নরেন চক্রবর্তী বলেছেন, সংগঠনের স্বার্থে আমাদের নেত্রী নিজে এই কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। তাই সবাইকে মিলিতভাবেই কাজ করতে হবে। উল্লেখ্য, তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই যে এই দু’টি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে,তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপুরে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বে এবার ১২ জনের কোর কমিটি
RELATED ARTICLES