নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ মাসিক ভাতা বৃদ্ধি ও সরকারি সবেতন ছুটি সহ আশা কর্মীদের কর্মবিরতির প্রভাব আজ থেকে পড়তে শুরু করল বাঁকুড়ার গ্রামীন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। লাগাতার কর্মবিরতির জেরে জেলায় প্রসুতি ও শিশুর স্বাস্থ্য পরিসেবা ও টীকাকরণ কর্মসূচী ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কার পাশাপাশি আগামীকাল জাতীয় স্তরের পোলিও টীকাকরণ কর্মসূচী রূপায়ন আদৌ কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। আশা কর্মীদের পরিসেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। এ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যতম মেরুদন্ড আশা কর্মীরা। বাঁকুড়া জেলাতে কমবেশি প্রায় আড়াই হাজার আশা কর্মী রয়েছেন। প্রতি এক হাজার জনসংখ্যা পিছু রয়েছেন এক জন করে আশা কর্মী। ওই এক হাজার জনসংখ্যার স্বাস্থ্য বিষয়ক যাবতীয় সমস্যা ও টিকাকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ ও স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে সেতু হিসাবে কাজ করেন তাঁরা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে শিশুদের টিকাকরণ,শিশুদের সময়মতো টিকাকরণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া, প্রসুতিদের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া, তাঁদের সময়মতো টিকা দেওয়া এমনকি প্রসবের সময় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষের কাছে একমাত্র ভরসা এই আশা কর্মীরা। শুধু শিশু ও প্রসুতিদের স্বাস্থ্য পরিসেবা দেওয়াই নয়,বাড়ি বাড়ি ঘুরে আশা কর্মীদের সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতেই যাবতীয় পরিকল্পনা করে স্বাস্থ্য দফতর। পোলিও,ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া দূরীকরণ সহ অন্যান্য সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পকে সাফল্যের মুখ দেখানোর ক্ষেত্রেও অন্যতম কান্ডারী এই আশা কর্মীরা। সেই আশা কর্মীরা ভাতা বৃদ্ধি সহ একাধিক দাবীতে শুক্রবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করায় মাথায় হাত পড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। এই পরিস্থিতিতে রবিবার জাতীয় পোলিও টীকাকরণ কর্মসূচী আদৌ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে ব্যাপক দুশ্চিন্তায় স্বাস্থ্য দফতর। আশা কর্মীদের কর্মবিরতিতে চূড়ান্ত সমস্যায় সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবী,আশা কর্মীরা এভাবে কর্মবিরতি চালিয়ে গেলে সময়মতো টিকা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে বহু প্রসুতি ও শিশুকে। স্বাস্থ্য পরিসেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরী হওয়া সত্বেও নিজেদের অবস্থানে অনড় আশা কর্মীরা। তাঁদের দাবী,রাজ্য সরকারের কাছে তাঁরা বারেবারে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের দাবী পূরণের ব্যাপারে ন্যুনতম সহমর্মিতা দেখায়নি রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কিছুটা বাধ্য হয়েই কর্মবিরতি শুরু করেছেন। দাবীপুরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
আশাকর্মীদের কর্মবিরতিতে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিসেবায়
RELATED ARTICLES