সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ১৩ নভেম্বরঃ প্রয়াত হলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তথা বাঁকুড়া কেন্দ্রের নয়(৯) বারের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। সোমবার দুপুর সোয়া বারোটা নাগাদ তেলঙ্গানার হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই সিপিএম নেতা। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রীও প্রয়াত হন। বর্তমানে তাঁর এক পুত্র ও দুই কন্যা রয়েছেন। বাসুদেব বাবুর প্রয়াণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে রাজনৈতিক মহলে। কান্নায় ভেঙে পড়েন পুরুলিয়া জেলার আদ্রায় আদি বাড়িতে থাকা পরিবার,পরিজনেরা। ১৯৪২ সালের ১১ জুলাই পুরুলিয়ায় জন্ম হয়েছিল বাসুদেবের। সেখানেই পড়াশোনা। ছাত্র বয়সেই বাম আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আদ্রার নিগম নগর নিগমানন্দ সেবাশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষকতা করতেন। পরে প্রধান শিক্ষক হন সেখানে। শ্রমজীবী মানুষের নানা ধরনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৮০ সালে বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন বাসুদেব। তার পর ২০১৪ পর্যন্ত সেখানকার সাংসদ ছিলেন তিনি। রেলের শ্রমিক আন্দোলনেরও অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী মুনমুন সেনের কাছে হেরে যান। দীর্ঘ দিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন বাসুদেব। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক ও সমাজের প্রভূত ক্ষতি হল বলে কয়েক দশকের ছায়া সঙ্গী সিপিএমের সংগঠক বিভূ মুখোপাধ্যায় জানান। তিনি বলেন, “দলের জন্য শিক্ষকতা থেকে স্বেছ্বাবসর নিয়েছিলেন। একজন আদর্শ অভিভাবককে হারালাম। পুরুলিয়া বাঁকুড়ার রেলের উন্নতিতে তাঁর অবদান রয়েছে।” রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও শিক্ষকতা পেশাকে ভালোবেসেছিলেন। ওই স্কুলেরই প্রাক্তন ক্রীড়া শিক্ষক গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, “১৯৮৭ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন কাজে যোগ দিয়েছিলাম। ছাত্রদের সঙ্গে সঙ্গে ও শিক্ষকদের শৃংখলার মধ্যে রাখতে বলতেন।” এদিকে পুরুলিয়া শহরে সিপিএমের জেলা সদর কার্যালয়ে প্রবীণ নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা। দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। হয় শোক মিছিল।
প্রয়াত বাসুদেব আচারিয়া,শোকাচ্ছন্ন পুরুলিয়ার রাজনৈতিক মহল
RELATED ARTICLES