সনাতন গড়াই,দুর্গাপুর,১৮ জুন: বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে জাতীয় সড়কে ওঠার মুখেই একটি ইনোভা গাড়ি তার বাইক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তারপরেই ভারতীয় ডাকের কর্মীকে চ্যাংদোলা করে তুলে বেপরোয়া গতিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারেট অফ পুলিশের অফিসের পাশ দিয়েই চলে যায় উত্তরপ্রদেশের নাম্বার লাগানো ইনোভা গাড়িটি। নিমিষে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় দুর্গাপুরের পিয়ালা সংলগ্ন নব ওয়ারিয়া এলাকা। পুলিশের কাছে খবর পৌঁছাতেই শুরু হলো জেলার কোনায় কোনায় নাকা চেকিং। ঝাড়খন্ড আর বাংলার সীমান্ত ডুবুরডিতে চিরুনি তল্লাশি শুরু করল পুলিশ। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ধরা পরল উত্তরপ্রদেশের গাড়িটিও। সেই গাড়িতে ছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। জানা গিয়েছে, রাজস্থানের মাখনলাল মিনা নামের বছর ৩২ এর এক যুবক দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের ভারতীয় ডাক বিভাগে কাজ করেন। তিনি কর্মসূত্রে দুর্গাপুরের পিয়ালা এলাকার নব ওয়ারিয়া এলাকাতেই স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। মঙ্গলবার সকালে অন্যান্য দিনের মতোই বাইকে করে তিন কিলোমিটার দূরে সিটি সেন্টারের ডাক বিভাগের অফিসে যাচ্ছিলেন কাজে। জাতীয় সড়কে ওঠার আগেই একটি ইনোভা গাড়ি আসে এবং মাখনলাল মিনার বাইকে হালকা ধাক্কা দেয়। মাখনলাল মীনা পড়ে যেতেই চারজন যুবক ওই গাড়ি থেকে নামে। তারপরেই ওই যুবককে চ্যাংদোলা করে তোলা হয়। তারপর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারেট অফ পুলিশের অফিসের পাশ দিয়ে পলাশডিহা হয়ে চলে যায় গাড়িটি। তারপরেই পুলিশের কাছে খবর যেতেই শুরু হয় নাকা চেকিং। ঝাড়খণ্ড সীমান্ত ডুবুরডিহিতে ধরা পড়ে ওই গাড়িটি। ওই গাড়িতে ছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কন্যাপুর থানার পুলিশ উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে উত্তরপ্রদেশের সাবিন থানা এলাকায় চুরি সহ প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে মাখনলালের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তারপরেই আদালতের নির্দেশ ছাড়াই এইভাবে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুর থানায়। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি দুর্গাপুর সুবীর রায় বলেন,”এই খবর জানাজানি হতেই আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সমস্ত জায়গায় নাকা চেকিং শুরু হয়। খুব কম সময়ের মধ্যেই উদ্ধার হয় যুবক। তবে উত্তরপ্রদেশে পুলিশ গ্রেফতারের সমন নিয়ে ওই যুবককে গ্রেফতার করে। তবে পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় আমরা ওই যুবককে ফিরিয়ে নিয়ে এলাম। এটা অপহরণের কোন ঘটনা নয়। এবার যা আইন আছে সে আইন মোতাবেক কাজ হবে।” ভাড়া বাড়ির মালিক হরেনচন্দ্র দাসের দাবি,”স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পেরেই মঙ্গলবার সকালে নবওয়ারিয়ার মোড়ে যান। জানতে পারি আমার বাড়ির ভাড়াটিয়া মাখনলাল মিনা অপহরণ হয়েছে। তার কিছুক্ষণ পরেই জানতে পারি মাখন লাল উদ্ধার হয়েছে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশকে ধন্যবাদ।”
আইন ভেঙে ডাক বিভাগের কর্মীকে ‘অপহরণ’ করে পালাতে গিয়ে বাংলার পুলিশ আটকালো যোগী রাজ্যের পুলিশকে
RELATED ARTICLES