বিশেষ প্রতিনিধি, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরের সভা থেকে বাংলার জন্য সাত প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মধ্যে রয়েছে— বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার জন্য ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন (সিডিজি) প্রকল্প (১৯৫০ কোটি টাকার), দুর্গাপুর-হলদিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন-এর দুর্গাপুর থেকে কলকাতা (১৩২ কিলোমিটার)-র অংশ (প্রধানমন্ত্রী উরজা গঙ্গা প্রকল্পের অংশ)। এ ছাড়াও দুর্গাপুর ইস্পাত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৪৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রোজগারের সুযোগ বাড়বে বলে দাবি করেছে কেন্দ্র। রেল পরিকাঠামোর উন্নয়নে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মোদী। তার মধ্যে রয়েছে পুরুলিয়া-কলকাতা রেললাইন ডাবলিং (৩৬ কিলোমিটার)। এর ফলে জামশেদপুর, বোকারো, ধানবাদের কারখানাগুলির মধ্যে রেল সংযোগের সুবিধা বাড়বে বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র। প্রকল্পটি ৩৯০ কোটি টাকার। প্রশাসনিক সভার মঞ্চে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্য সভার সাংসদ তথা দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। এ ছাড়াও ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং আরও দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী ও শান্তনু ঠাকুর। প্রশাসনিক সভা সেরে পাশে তৈরি অন্য মঞ্চে রাজনৈতিক সভায় আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দেখা যায় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী কে।
সাধারণত জয় শ্রী রাম ধ্বনি দেওয়ার বদলে জয় মা কালী’ বলে বক্তৃতা শুরু করেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি বিকশিত বাংলা চায়। বাংলার এই মাটি প্রেরণায় পূর্ণ। বিজেপি সমৃদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ তৈরি করতে চায়। এক সময়ে বাংলা সমৃদ্ধই ছিল। বিকাশের কেন্দ্র ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। আমরা এই অবস্থা বদলাতে চাইছি। এখন কাজের জন্য বাইরে যেতে হয় বাংলার মানুষকে। বাংলাকে এই অবস্থা থেকে বার করতে হবে।’’ বাংলা ভাষাতেই মোদী বললেন, ‘‘বাংলা পরিবর্তন চায়। বাংলা উন্নয়ন চায়।’’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারতের বিকাশে দুর্গাপুরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দুর্গাপুর ভারতের শ্রমশক্তির বড় কেন্দ্র। পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে বিকাশ হচ্ছে। বহু মানুষের রোজগার নিশ্চিত হবে। কলকাতা মেট্রো দ্রুত বিস্তার হবে। রেলের বিকাশ হচ্ছে। ২৫-৩০ লাখ ঘরে পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছোচ্ছে। গত ১০ বছরে গ্যাস সংযোগে অভাবনীয় কাজ হচ্ছে।’’ মোদী বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতা এলেই বাংলা দেশের অন্যতম শিল্পসমৃদ্ধ রাজ্য হয়ে উঠবে। এটা আমার বিশ্বাস। কিন্তু তৃণমূল বাংলাকে শিল্পোন্নত হতে দিচ্ছে না। তাই তৃণমূল কে বাংলা থেকে সরাতে হবে। পশ্চিমবঙ্গকে এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে, এখানে নতুন বিনিয়োগ আসে। কর্মসংস্থান তৈরি হয়। কিন্তু যত দিন তৃণমূল থাকবে, তত দিন এ সব হবে।’’ মোদী বলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীদের হয়ে সরাসরি নেমে পড়েছে তৃণমূল। কান খুলে শুনে রাখুন, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সংবিধান অনুযায়ীই পদক্ষেপ করা হবে। ’’ মোদীর ভাষণে আরজি কর এবং কসবাকাণ্ডের প্রসঙ্গও উঠে আসে। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার হাসপাতালও মেয়েদের জন্য সুরক্ষিত নয়। তখনও দেখা গিয়েছে, কী ভাবে অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে তৃণমূল। এর পর কলেজেও একটা মেয়ের উপর কী ভাবে অত্যাচারা চালানো হল। সেখানে দেখা গেল তৃণমূলের লোকেরা জড়িত।’’
দুর্গাপুর থেকে বাংলার জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
RELATED ARTICLES