নিজস্ব সংবাদদাতা,বর্ধমান: মঙ্গলকোটের শিমুলিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি খুনে বর্ধমান জেলা পরিষদের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ সহ ২৫ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিলেন কাটোয়া মহকুমা আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা এজলাসের বিচারক মধুছন্দা বসু। বিচারকের রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে জেলা পরিষদের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ বিকাশ চৌধুরী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সত্যের জয় হল। দীর্ঘ সাত বছরে আমার সব হারিয়ে গেছে।নাম না করে দলের একাংশের উপর ষড়যন্ত্রের দায় চাপিয়ে অভিযোগ তুললেন। অভিযুক্তদের আইনজীবী ধীরেন্দ্র নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই রায়ে আমরা খুশি। পুলিশি তদন্তে গাফিলতি ছিল। খুন হয়েছিল কিন্তু পুলিশ যাদের অভিযুক্ত বলে দাবি করছিল তার পক্ষে তথ্য প্রমাণাদির বিস্তর অভাব ছিল। যদিও এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদনের করবেন বলে সরকারি আইনজীবী সরোজ সরকার জানিয়েছেন।
২০১৭ সালের ১৯ জুন সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ মঙ্গলকোট থানার শিমুলিয়া চটিতে নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই দুষ্কৃতীর গুলিতে খুন হয় পেশায় মাছ ব্যবসায়ী শিমুলিয়ার অঞ্চল সভাপতি ডালিম সেখ ওরফে সানাউল্লাহ সেখ। পরদিন নিহত ডালিম সেখের ভাই আসাদুল্লা সেখ মঙ্গলকোট থানায় দুই তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ বিকাশ চৌধুরী ও বিধায়ক প্রতিনিধি রহমতুল্লাহ চৌধুরীকে মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। ১ জুলাই মামলা তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ডালিম খুনে মোট ২৮ জনকে অভিযুক্ত করে কাটোয়া মহকুমা আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিআইডি।চার্জশিট পেশ করার পর ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ বর্ধমান থেকে বর্ধমান জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ তথা মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা বিকাশ চৌধুরীকে সিআইডি বর্ধমানের বাইপাশ থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। যদিও এদের মধ্যে দুজনকে ফেরার দেখানো হয়েছে। অভিযুক্তদের জেলে রেখে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে চলা শুনানি প্রক্রিয়ায় ৩৬ জন সাক্ষ্যদান করেন। বিচারের শুনানির শেষদিকে এক অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হওয়ায় তাকে বাদ রেখে আজ ২৫ জনকে বেকসুর খালাস করে দিলেন দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা এজলাসের বিচারক। তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্তরা খালাস পেয়ে বলেন সত্যের জয় হল। প্রায় সাত বছর বিকাশ চৌধুরী কারাবাসের পর আবার তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচনে প্রচার করবে বলে জানায়। মঙ্গলকোটে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব কারণেই তাকে খুনের মিথ্যা মামলায় জেল খাটতে হল বলে দাবি করেন বিকাশ চৌধুরী।
মঙ্গলকোটে তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি খুনে ২৫ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস
RELATED ARTICLES