নিজস্ব প্রতিনিধি,বর্ধমানঃ আচমকা ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তার জেরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। অগত্যা হাসপাতালের বেডে বসেই সোমবার মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা দিল বুদবুদের মানকর গার্লস স্কুলের ছাত্রী রক্তিমা ঘোষাল। তার পরীক্ষা দেবার সকল ব্যবস্থা করে দেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। মানকর গার্লস স্কুলের ছাত্রী রক্তিমার মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে মানকর উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে দুটি পরীক্ষা ভাল ভাবে হলেও তৃতীয় পরীক্ষার আগের দিন হঠাৎ সে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। পরীক্ষা নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন তার পরিবারের সদস্যরা। এর পরই পরিবারের লোকেরা স্কুল পরিচালন সমিতিকে বিষয়টি জানালে তারাই কর্তৃপক্ষকে জানান। কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের বেডেই এদিনের পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। রক্তিমার বাবা জানান, গতকাল সকাল থেকে তার মেয়ে অসুস্থ হওয়ার কারণে প্রথমে ঔষধের দোকান থেকে ঔষধ এনে খাওয়ান। বিকেল পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়ায় তাকে মানকর গ্ৰামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন। রবিবার রাত্রি দুটো নাগাদ হঠাৎ বমি শুরু হলে তাকে পুনরায় মানকর গ্ৰামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে তাকে ভর্তি রেখে শুরু হয় চিকিৎসা। সকালে তার বাবা স্কুল পরিচালন কমিটিকে জানালে তারা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে নির্দেশ পেয়ে হাসপাতালের মধ্যেই তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। এরপরই এক হাতে সেলাইন আর এক হাতে পেন নিয়ে পরীক্ষা দিতে শুরু করে রক্তিমা। এদিকে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে বসে থাকতে দেখা যায় তার বাবা ও মাকে। রক্তিমা জানায়, তার শরীর খুবই খারাপ ছিল। ইতিহাস পরীক্ষাটি ভালই দিয়েছে সে। তবে সে চিন্তায় আছে এখনো শরীর সারেনি। হাসপাতাল ছুটি দিয়ে দিলে কী হবে? মানকর গ্ৰামীণ হাসপাতালে চিকিৎসক উজ্জল চৌধুরী জানিয়েছেন, রক্তিমার কাল থেকেই ডায়েরিয়া হয়েছে। রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। সাথে সাথে আজ তার পরীক্ষার দিতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নজর রেখেছে। অন্য কর্মীরাও তাকে সাহায্য করেছেন। তবে তিনি জানান, রক্তিমা যদি সুস্থ হয়, মুখে ওষুধ খেতে পারে তবেই তাকে ছাড়া হবে। নতুবা কালও পরীক্ষা এখানেই দিতে হবে।তিনি আরো জানান, বাধ্য হয়েই তাকে সেলাইন নিয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পাঁচুগোপাল মুখার্জি জানান, তারা সময়মত উদ্যোগ নিয়ে সবস্তরে যোগাযোগ করেন। হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন তিনি নিজেও।
এক হাতে স্যালাইন অন্য হাতে কলম,হাসপাতালের বেডেই মাধ্যমিক পরীক্ষা
RELATED ARTICLES