নিজস্ব সংবাদদাতা,বর্ধমানঃ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মেয়েদের পড়াশোনার কথা মাথায় রেখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে রীতিমত ঘটা করে যে স্কুল চালু হয়েছিল, ১০ বছরের মধ্যেই সেই স্কুল হয়ে গেল ছাত্রী শূন্য। গোটা ঘটনায় বর্ধমানের মেমারী থানার জোতরাম -সাতগেছিয়া বাজার বালিকা বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত অভিভাবক থেকে শিক্ষক শিক্ষিকারা রীতিমত মুষড়ে পড়েছেন। কিভাবে এই স্কুলকে পুনরুজ্জীবিত করা যায় তা নিয়ে বিস্তর ভাবনা চিন্তা করলেও এখনও সে অর্থে কোনো দিশা মেলেনি। জানা গেছে, ২০১০ সালে ঘটা করে প্রতিষ্ঠিত হয় এই জুনিয়র বেসিক স্কুলটি। স্কুলের আশপাশের জোতরাম, বেনেগাঁ, কাজিডাঙ্গা, মুন্সীডাঙ্গা প্রভৃতি গ্রামের মেয়েদের শিক্ষার কথা মাথায় রেখেই অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ১০ বছর যেতে না যেতেই হু হু করে কমতে থাকে ছাত্রীসংখ্যা। বর্তমানে আছে স্কুল ভবন। আছেন ২ জন শিক্ষিকাও। কিন্তু ঘটা করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মাত্র ১০ বছরেই ছাত্রীর অভাবে বন্ধ হওয়ার মুখে পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারী থানার এই জোতরাম-সাতগেছিয়া বাজার বালিকা বিদ্যালয়। স্কুলে পড়ুয়া না থাকায় পঠন-পাঠন বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনই নিয়ম করে স্কুলে আসেন ২ জন শিক্ষিকা ও একজন গ্রুপ ডি কর্মী। তাঁদের চোখে মুখে এখনও এই স্কুল ফের রমরমিয়ে চলার স্বপ্ন রয়েছে। জানা গেছে, করোনা অতিমারীর সময় ২০২০ সাল থেকেই একপ্রকার পড়ুয়া কমতে থাকে এই স্কুলে। ২০২০-২০২১ সালে মাত্র ৩ জন পড়ুয়া ছিলো স্কুলে। তারা চলে যেতেই একপ্রকার পড়ুয়া শুন্য হয়ে যায় স্কুলটি। বর্তমানে শিক্ষিকাদের কাজ নিয়ম করে স্কুল আসা ও আবার বাড়ি ফিরে যাওয়া। একপ্রকার মন খারাপ তাদেরও। স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা পার্বতী আশ জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে তিনি যখন স্কুলে যোগ দেন তখনও প্রায় ৮০ জন পড়ুয়া ছিলো। তারপর আস্তে আস্তে ২০২২-২৩ সালে সেই পড়ুয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় শুন্যই। স্কুলের বর্তমান অবস্থার কথা প্রশাসনিক স্তরেও জানানো হয়েছে। আগামীতে যে রকম নির্দেশ আসবে সেইমতো কাজ করবেন। অন্যদিকে, গ্রামের বাসিন্দা আল্পনা খাঁ ও রামচন্দ্র খাঁ জানিয়েছেন, এলাকার মেয়েদের কথা চিন্তা করেই ২০১০ সালে এই স্কুল তৈরী হয়। সেইসময় জোতরাম, বেনেগাঁ, কাজিডাঙ্গা, মুন্সীডাঙ্গা প্রভৃতি গ্রাম থেকে মেয়েরা পড়তে আসতো। কিন্তু বর্তমানে স্কুলে পড়ুয়া নেই। যেহেতু এটি একটি জুনিয়ার বেসিক স্কুল তাই অভিভাবকদের বারবার স্কুল চেঞ্জ করতে হবে এই মানসিকতা থেকেই মেয়েদের এই স্কুলে ভর্তি করতে চাইছেন না। তবে স্কুল পুনরায় যাতে চালু হয় তারা তা চাইছেন। কিন্তু কিভাবে তা সম্ভব তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কেউ কেউ বলেছেন, স্কুলটিকে জুনিয়র থেকে মাধ্যমিকে উন্নীত করা হোক। তাহলে অভিভাবক থেকে ছাত্রীদেরও সুবিধা হবে। ফের তারা আসবে স্কুলে। তবে যেহেতু গোটা বিষয়টি এখন প্রশাসনের নজরে রয়েছে তাই সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলেই।
স্কুল চালুর ১০ বছরেই ছাত্রী শূন্য বালিকা বিদ্যালয়
আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মেয়েদের পড়াশোনার কথা মাথায় রেখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে রীতিমত ঘটা করে যে স্কুল চালু হয়েছিল, ১০ বছরের মধ্যেই সেই স্কুল হয়ে গেল ছাত্রী শূন্য।
RELATED ARTICLES