নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: জমি দখলে নাম জড়ালো তৃণমূল নেতার। পেট্রোল পাম্পের জন্য জোর করে জমি দখলের অভিযোগ উঠলো পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সেখ আব্দুল লালনের বিরুদ্ধে। জমি দখলের ঘটনার জেরে বুধবার সকাল থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ালো আউশগ্রামের গেঁরাই ও বিষ্ণুপুর গ্রামে। দু’পক্ষের লোকজন জমায়েত হলে প্রবল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে সময়মতো সামলে দেয় পুলিশ। ‘বিতর্কিত’ জমির কাছে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশবাহিনী। আউশগ্রামের গেঁরাই মৌজায় ৩৬ দাগ নম্বরের বিঘাদেড়েক জমি নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে। স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম মোল্লা ও ইউসুফ মোল্লা দুই ভাই দীর্ঘকাল ধরেই ওই জমি ভোগদখল করে আসছিলেন। জানা গিয়েছে সম্প্রতি তারা ওই জমিটি বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা নেন। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ওই জমিটি কিনবেন বলে ইব্রাহিম মোল্লারা তার সঙ্গে পাকা কথা বলে নেন। ক্রেতা জমির সামনে বালি ফেলার পরেই উত্তেজনার সূত্রপাত। গেঁরাই গ্রামের কয়েকজন গ্রামবাসী দাবি করেন ৩৬ দাগ নম্বরের ওই জমিটি মসজিদ কমিটির। অভিযোগ, এরপর আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি আব্দুল লালনের নেতৃত্বে লোকজন গিয়ে জমিটির দখল নিতে চাষ দিয়ে দেন। মসজিদ কমিটির পক্ষে জমিতে কয়েকটি পতাকাও পুঁতে দেওয়া হয়। ইব্রাহিম মোল্লা, ইউসুফ মোল্লা এনিয়ে মঙ্গলবার পুলিশের কাছে আব্দুল লালন সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
বুধবার দু’পক্ষই বিতর্কিত জমির কাছে জমায়েত হলে উতপ্ত হয়ে ওঠে।আউশগ্রাম থানার আইসি আব্দুর রব খানের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেন। পুলিশ বিষ্ণুপুর গ্রামের লোকজনদের আটকে দেয়। পাশাপাশি গেঁরাই গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে গেলে তাদেরও সরিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু দুইপক্ষই কিছুটা তফাতে জড়ো হয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে। ইব্রাহিম মোল্লাদের পক্ষ নিয়ে বিষ্ণুপুর গ্রামের বেশকিছু লোকজন পুলিশের কাছে দাবি করে, যেহেতু জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র ইব্রাহিম মোল্লাদের নামেই রয়েছে তাই তাদের জমি দখলমুক্ত করে দিতে হবে। অপরদিকে গেঁরাই গ্রামের কিছু লোকজন দাবি করে মসজিদ কমিটির জমিটি ফিরিয়ে দিতে হবে।জানা গেছে,আউশগ্রামের ভাতকুণ্ডা থেকে মানকর যাওয়ার সড়কপথের পাশে গেঁড়াই ও বিষ্ণুপুর গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় রয়েছে ওই জমিটি । ইব্রাহিম মোল্লা ও ইউসুফ মোল্লা পরিবারের দাবী গেঁড়াই মৌজার ৩৬ দাগ নম্বরের ওই দেড় বিঘে জমি তারা বংশ পরম্পরায় ভোগ দখল করে আসছিলেন।তার স্বপক্ষে কাগজপত্রও আছে । নিয়মিত চাষবাসও করতেন তারা ।আমাদের জমি কেনার জন্য লালন লোক পাঠায়। কম দাম দেওয়ায় আমরা তাকে জমি দিইনি। কিন্তু সোমবার আব্দুল লালন লোকজন সঙ্গে এনে জমিতে জোর করে চাষ দিয়ে দখল করে নিয়েছে। যদিও আব্দুল লালনের পালটা দাবি, মসজিদের অধীনে প্রায় ৬৫ বিঘে সম্পত্তি রয়েছে,জমিগুলি মসজিদ কমিটির পক্ষে গ্রামের বিভিন্ন মানুষদের চাষাবাদ করতে দেওয়া আছে এবং স্বত্ত্ব স্বরূপ উৎপাদিত ফসলের বেশ কিছু অংশ মসজিদকে দেওয়ার কথা,তিনি তো ফসল দিচ্ছিলেন না উপরন্তু ইব্রাহিম মোল্লারা মসজিদের জমিটি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। গ্রামবাসীরা তা রুখে দিয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে লালনের দাবী তিনি জমি দখল করেন নি।মসজিদের জমি। দুপক্ষের মধ্যে যাতে ঝামেলা না হয় তার চেষ্টা করেছি।পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করে বলেন পঞ্চায়েতের হারার ফলে এবং তাকে কালিমালিপ্ত করা জন্য সিপিএম এসব করছে। যদিও সিপিএমের পাল্টা দাবী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল অশান্তি করেছে।আসলে লালন ওখানে পেট্রোল পাম্প বানানোর জন্য এটা করছে।সেটা মানুষের কাছে পরিস্কার।জমির মালিকানা স্বত্ত্ব থেকে জমির চরিত্র দেখা হোক।তদন্ত দাবী করছি বলে জানান সিপিএম নেতা অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়। গেঁড়াই জামিয়া মসজিদের সহ সভাপতি রবিউল হকের দাবী জমিটা মসজিদের জমি।এই জমি তাদের ভাগে দেওয়া হয়।পরে ওরা দখল করে নেয়।জমিটির সামনে কনস্ট্রাকশন করতে গেলে মসজিদ কমিটির লোকেরা চাষ দিয়ে দেয়।আমাদের জমির স্বপক্ষে কাগজ আছে।চাষ করতে পারে কিন্তু আইনত বিক্রি করতে পারে না।
পেট্রোল পাম্পের জন্য জোর করে জমি দখলের অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে
RELATED ARTICLES