জয় লাহা,পানাগড়ঃ সংস্কারের কাজ চলছে সেচ ক্যানেলের। তাতে যাতায়াত করছে ডাম্পার, জেসিবিসহ নানান ভারি যানবাহন। তার জেরে ভেঙে পড়ছে ক্যানেল পাড়ের রাস্তা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আরও বেহাল হয়ে পড়েছে ভাঙাচোরা ওই রাস্তা। বেহাল রাস্তায় বিপাকে পড়েছে সাধারন মানুষ থেকে স্কুল পড়ুয়া। আবার কোথাও ঝুঁকি নিয়ে করছে বাস চলাচল। এমনই নজিরবিহীন ছবি ধরা পড়ল পানাগড়,গলসী-১ নং ব্লকের পোতনা-পুরষা এলাকায়। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাঙ্ক বিভিন্ন জলাধার নদী, ব্যারেজ সংস্কার, আধুনিকিকরন, পুনর্গঠনের অর্থ সাহায্যের প্রস্তাব দেয়। প্রকল্পের নাম ড্যাম রিহ্যাবিটেশন এন্ড ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ড্রিপ)। তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওই প্রজেক্টে অংশগ্রহন করে নি। পরে ২০১৮ সালে ড্রিপ-২ তাতেও অংশগ্রহন করেনি। পরে ওই বছরে আলাদা করে বিশ্বব্যাঙ্কে নদী ও সেচ ক্যানেল সংস্কারের জন্য অর্থ সাহায্যের আবেদন করে। তখন বিশ্বব্যাঙ্কে ৩২০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করে। ওই অর্থে রাজ্যের দামোদর নিম্ন তীরবর্তী এলাকায় সেচ ক্যানেল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। টেন্ডারে একটি বেসরকারী সংস্থা কাজের বরাত পায়। সেই মতো দুর্গাপুর ব্যারেজের নিম্ন তীরবর্তী ক্যানেল সংস্কারের কাজ চলছে জোরকদমে। আর ওই কাজে ব্যাবহার হচ্ছে নানান পোক-লেন জেসিবি, ডাম্পারের মত ভারি মেশিন ও যানবাহন। ক্যানেলের সংস্কার হওয়া মাটি,পলি তুলে রাখা হচ্ছে পাড়ের ওপর। আর তার জেরে ভেঙে পড়ছে ক্যানেল পাড়ের রাস্তা। গত কয়েক মাস ধরে বেহাল পানাগড়ের রেলপার সংলগ্ন ডিভিসি ক্যানেলের ব্রিজ থেকে পলাশডাঙ্গা যাওয়ার রাস্তা। ওই রাস্তার ওপর নির্ভরশীল বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে রয়েছে কয়কটি বিদ্যালয়ও। বেহাল রাস্তার জেরে যান চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কর্দমাক্ত রাস্তায় যান চলাচল যেমনই বিপদজ্জনক, তেমনই সুষ্ঠভাবে চলাচল করাও ঝুঁকিপুর্ন। একটু বেসামাল হলেই যানবাহন যেমন উল্টে পড়বে। তেমনই পড়ে গিয়ে পা ভাঙার শঙ্কাও রয়েছে। একইরকম অবস্থা গলসী-১ নং ব্লকের ভাষাপুল থেকে সিমিসিমি যাওয়ার রাস্তা। ভাষাপুর- পোতনা প্রায় ৩ কিলোমিটার ওই রাস্তা বিপদজ্জনক হয়ে পড়েছে। ভাষাপুর ও সিংপুরেরমাঝপথে সেচ ক্যানেলের ওপর সেতু রয়েছে। বছরখানেক ধরে সেতুটি জরাজীর্ন। দুর্ঘটনা ঠেকাতে ওই সেতুর বাইপাস রাস্তা করা হয় মোরামের। আর সেটাই বৃষ্টিতে বেহাল হয়ে পড়েছে। ওই রাস্তার ওপর নির্ভরশীল কমবেশী ২৫ টি গ্রাম। ৪ টি বাস যাতায়াত করে। এছাড়াও রয়েছে একাধিক স্কুল। গ্রামবাসীদের কাছাকাছি পুরষা হাসপাতালে আসার একমাত্র রাস্তা। গত কয়েকদিনরে বৃষ্টিতে রাস্তাটি আরও বিপদজ্জনক হয়ে পড়েছে। এক হাঁটু গর্ত ও কাদায় ভর্তি। যেকোন সময় যাত্রী বাস থেকে যানবাহন উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মাস কয়েক আগে বিক্ষোভ দেখানোর পর মেীাম দিয়ে মেরামত করা হয়েছিল। সেচ ক্যানেল সংস্কারে ভারি যানবাহন চলাচলে আরও বেহাল হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। ৩ কিলোমিটার বেহাল রাস্তা এঁড়িয়ে চলতে ৯ কিলোমিটার ঘুরপথে আসতে হচ্ছে।” গ্রামবাসীদের দাবী, রাস্তাটি দ্রুত মেরামত না হলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে বহু প্রানহানি হতে পারে।” যদিও এবিষয়ে দুর্গাপুর সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার বলেন,” সেচ ক্যানেলের কাজ বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তায় হচ্ছে। তার জন্য নোডাল বিভাগ রয়েছে। ক্যানেল পাড়ে রাস্তা তাতে মেরামত করার বিষয়ে জানা নেই।” যদিও এই বিষয়ে কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য বলেন,” সেচ দফতর মেরামত না করলে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেরামত করার চিন্তাভাবনা করা হবে।”
সেচ ক্যানেলের সংস্কারের জের,বেহাল রাস্তা,দুর্ভোগে গ্রামবাসীরা
সংস্কারের কাজ চলছে সেচ ক্যানেলের। তাতে যাতায়াত করছে ডাম্পার, জেসিবিসহ নানান ভারি যানবাহন। তার জেরে ভেঙে পড়ছে ক্যানেল পাড়ের রাস্তা।
RELATED ARTICLES