সংবাদদাতা,অন্ডালঃ শীতকাল হচ্ছে বাইরে ঘুরতে যাওয়া আর পিকনিকের মরশুম। সাধারণত ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের দিন থেকেই এই মরশুম শুরু হয়ে যায়। চলে জানুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত। ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষে খনি অঞ্চলের পার্ক গুলিতেও দেখা গেল পর্যটক ও পিকনিক পার্টিদের ভিড়। মনোরঞ্জন ও উপযুক্ত পরিকাঠামোর জন্যই পার্ক গুলিতে ভিড় বাড়ছে বলে মত এলাকাবাসীর। শুধু শিল্পাঞ্চল নয়,খনি এলাকার পার্ক গুলিতেও পিকনিক করতে আসা ভ্রমনার্থীদের ভীড় বাড়ছে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের দিন থেকেই শুরু হয়ে গেছে পিকনিকের মরশুম। তাই পিকনিক পার্টি ও পর্যটকদের মনোরঞ্জন দিতে সেজে উঠেছে খনি অঞ্চলের পার্ক গুলিও। পিকনিকের মরশুমে গোটা জানুয়ারি মাস জুড়ে ভালো ভীড়ের আশা করছেন বিভিন্ন পার্কের দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্তারা। বিগত কয়েক বছরে এই সময় খনি অঞ্চলের বিভিন্ন পার্কে ভালো ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এবছরও সেই ধারা বজায় থাকবে বলেই আশা বিভিন্ন পার্কের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার কর্তাদের।
খনি অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভালো পার্ক রয়েছে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের সরণি ইকো পার্ক ও প্রতাপপুর পঞ্চায়েতের নাচন থিম পার্ক। পাণ্ডবেশ্বরের কুমারডিহির “ডিহি” পার্ক এবং অন্ডাল ব্লকের মদনপুর পঞ্চায়েতের ‘ধান্ডাডিহি শিশু উদ্যান”। মরশুম শুরুর আগেই পর্যটক ও পিকনিক পার্টিদের আকর্ষিত করতে পার্ক গুলি নতুন রুপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সরপি ইকো পার্কের দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্তা তন্ময় ঘোষ জানান, ছোটদের মনোরঞ্জনের জন্য খেলার বিভিন্ন সরঞ্জামের পাশাপাশি বড়দের বিনোদনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে নতুন বছরে। প্রতাপপুরের নাচন থিম পার্কের দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্তা হারাধন ঘোষ জানান, প্রতি বছরই পিকনিকের মরশুমে এখানে ভালো ভিড় হয়। ড্যাম্পে নৌবিহারের ব্যবস্থা আছে। নতুন রূপে সেজে উঠেছে পাণ্ডবেশ্বরের ডিহি পার্কও। পানীয় জলের পাশাপাশি পিকনিক পার্টিদের সব ধরনের স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা পার্কে রয়েছে বলে জানান পার্কের দায়িত্বে থাকা আশীষ ভট্টাচার্য। অন্যদিকে অন্ডাল ব্লকের মদনপুর পঞ্চায়েতের ধান্ডাডিহি গ্রামে ২০২২ সালে তৈরি হয়েছে “ধান্ডাডিহি শিশু উদ্যান পার্ক”। ফুল গাছের বাহারি বাগানের পাশাপাশি এই পার্কটির অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে ববি ট্রেন। যা ছোট বড় সবার খুব প্রিয়। গত বছর শীতের মরসুমে পার্কটির উদ্বোধন হয়েছে। ইতিমধ্যে পার্কটির কথা ছড়িয়ে পড়েছে জেলার সর্বত্র। পিকনিকের সমস্ত রকম বন্দোবস্ত পার্টিতে রয়েছে বলে জানান অজয় পাত্র। তাই পিকনিক পার্টি আর পর্যটকে ভরে উঠবে পার্ক চত্বর, এমনই আশা করছেন পার্কের দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিরা। তাদের মতে আগে খনি অঞ্চলে উন্নতমানের পার্ক ছিল না। ফলে এখানকার লোকজন পিকনিক করতে বাইরে যেতো। সাম্প্রতিককালে খনি অঞ্চলে একাধিক উন্নত মানের পার্ক গড়ে উঠেছে। ফলে ঘুরে বেড়ানোর জন্য বাইরে গেলেও পিকনিক করার জন্য এলাকার পার্ক গুলিই তাদের পছন্দ। সেই কারণে শীতের মরশুমে পার্ক গুলিতে ভিড় বেড়েছে বলে জানান তারা। শুধু স্থানিয়রাই নয়, এখানকার পার্কগুলি ঘুরে বেড়াতে ও পিকনিক করতে আসছেন খনি এলাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকার মানুষজনও। বুধবার ১ লা জানুয়ারি খনি অঞ্চলের সবকটি পার্কেই উপচে পড়েছিল পর্যটক ও পিকনিক পার্টিদের ভীড়। সরপি ইকো পার্কে পরিবার নিয়ে পিকনিক করতে আসা মহেশ মল্লিক বলেন, আগে পিকনিক করতে বাইরে যেতাম। কিন্তু গত দু-তিন বছর স্থানীয় পার্কে পিকনিক করি। পার্কগুলিতে পিকনিকের সমস্ত ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকায় এখন আর বাইরে যাই না। ছোটদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাও রয়েছে পার্কে। এখানে পিকনিক করতে ছোটরাও পছন্দ করে বলে জানান তিনি। অঞ্জলি দত্ত নামে এক মহিলা বলেন, শীতের সময় ঘুরতে বাইরে যাই। কিন্তু পিকনিক স্থানীয় পার্কগুলিতেই করি। মনোরঞ্জনের সমস্ত ব্যবস্থা এখানে রয়েছে, তাই বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না।