নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: জামাইষষ্ঠীর দিন জামাইকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে আদর আপ্যায়ন করে চব্বো চোষ্য খাওয়ানোর রেওয়াজ রয়েছে বাঙালিদের। সেইমতো অনেকে শশুর শাশুড়ি জামাই মেয়েকে আমন্ত্রণ করেছেন ঠিকই কিন্তু আবদার মেটাতে গিয়ে নাভিঃশ্বাস উঠেছে শ্বশুর মশাইয়ের। একে তো বাঁকুড়ায় তাপমাত্রা পারদ উর্ধ্বমুখী, তার সঙ্গে বাজারের গরম ছ্যাকায় নাজেহাল বাঁকুড়ার শশুর শাশুড়ীরা। জামাইকে জামাইষষ্ঠীতে আসতে বলেছেন কথা দিয়েছেন ইলিশ, পাবদা, গলদা খাওয়াবেন, শেষ পাতে থাকবে আম লিচু সহ দই মিষ্টি। কিন্তু আজ সকালে বাজারে গিয়ে বাজারদর শুনে আত্তারাম খাঁচা। এ যুগের অনেক জামাই আবার লাজ লজ্জার ধার ধরে না, শ্বশুর শাশুড়ির কাছে আবদার করে বসে এই খাব সেই খাব বলে। সেইসব শ্বশুর শাশুড়ির অবস্থা আরো খারাপ। একে তো জামাই আবদার মেটাতেই হবে অন্যদিকে পকেটে চিন্তাও করতে হবে, সবে মিলে জামাইষষ্ঠীর দিন মাথায় কপালে হাত শশুর শাশুড়িদের।এই অবস্থায় যেটা ভেবেছিলেন কিলো খানেক কিনবেন সেটা দুশো আড়াইশো গ্রাম কিনে নিয়ে গিয়ে রান্না করে জামাইয়ের পাতে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। শেষপাতে একটু ফলাহার করাবেন, আম লিচুর দরও আকাশ ছোঁয়া। এবার গাছে আম নেই, তাই লোকাল বাজারের আমের আমদানি নেই, তাই মালদা মুর্শিদাবাদ থেকে যেটুকু আম আসছে তা দিয়েই রক্ষে হচ্ছে রীতি রেওয়াজের। তাতেও মধ্যবিত্তের পক্ষে নাগালের বাইরে মাছ থেকে ফল সব কিছুই।
জামাই ষষ্ঠীর বাজার দর কেমন ছিল?
এক কিলো মতো একটা ইলিশের দাম ১৬০০ টাকা, সেটাই আবার পদ্মার হলে বাইশো টাকা। বাগদা ৬০০ টাকা কিলো, পাবদা চিংড়ি ৬০০ টাকা,কিলো প্রতি গলদা ৭০০ টাকা, পমপ্লেট ৮০০ টাকা, ভেটকি ৭০০ টাকা কিলো। লিচুর দাম প্রতি একশো কুড়ি থেকে দেড়শ টাকা। মধ্যবিত্তের আম ফজলির আমদানি নেই, স্থানীয় ফলন হওয়া হিমসাগর আম্রপালি দেখা মিলেনি বাজারে। আমের রাজা ল্যাংড়া একশো থেকে দেড়শো টাকা কিলো, বেগুনফালি ১২০ টাকা কিলো, তোতাপুরী ৬০ টাকা। যাই হোক,অগ্নিমূল্য বাজার সহ্য করেই জামাই বাবাদের আদর যত্ন করলেন শ্বশুর শ্বাশুড়িরা। তাতে যে বেশ হিমসিম খেতে হলো সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।


