Thursday, December 26, 2024
Google search engine
Homeদক্ষিণবঙ্গনবান্ন কবিতা উৎসবে ‘দুর্গাপুর রত্ন’ পুরস্কার পেলেন কবি গিরীন্দ্রনাথ চাকী ও ঝর্ণা...

নবান্ন কবিতা উৎসবে ‘দুর্গাপুর রত্ন’ পুরস্কার পেলেন কবি গিরীন্দ্রনাথ চাকী ও ঝর্ণা মুখোপাধ্যায়

প্রণয় রায়,দুর্গাপুর,৮ ডিসেম্বরঃ শীতের সকাল। মিষ্টি রোদ্দুর গায়ে মেখে পৌঁছালাম সুরেনচন্দ্র মডান স্কুলে। প্রেক্ষাগৃহে ঢোকার মুখেই কবি রঘুনাথ সিনহা কাঁধে ঝুলিয়ে দিলেন নবান্ন কবিতা উৎসবের পরিচয়পত্র সঙ্গে একটা নোটবুক সুদৃশ্য প্লাস্টিকের কভারে ভরা। ভেতরে ঢুকেই আঘ্রাণ পেলাম পৌষ মাসের নবান্নের বাস। না এই বাস নতুন ধানের চালের সুগন্ধিভরা নবান্নর বাস নয়,এ বাস নবীন প্রবীণ নানান কবিদের কবিতার আঘ্রাণ। প্রেক্ষাগৃহভর্তি নানান বয়সী কবিদের মেলা। নবান্ন কবিতা উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা রাজীব ঘাঁটির মুখে শুনলাম এ কবিতা উৎসবে একমাত্র উত্তরবঙ্গ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের প্রায়,সব জেলার কবিরা উপস্থিত। এমনকি সুদূর দিল্লি থেকে এসেছেন কবি ভাস্বতী চক্রবর্তী ও উত্তর ত্রিপুরা থেকে এসেছেন কবি অভিক কুমার দে। এছাড়াও  নানা প্রান্ত থেকে এসেছেন অসংখ্য গুণী কবি। কবি,চিত্রপরিচালক ও অভিনেতা সত্যপ্রিয় মুখোপাধ্যায় ষষ্টতম নবান্ন কবিতা উৎসবের উদ্বোধন করেন। স্বাগত ভাষণ দেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক সুকমল ঘোষ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি শ্যামল জানা।  অগ্রহায়ণ  মাস এলেই মনে পড়ে নতুন ধানে নবান্নের কথা। নতুন ধানের সেই সুবাসিত চালের আঘ্রাণ   ছড়িয়ে পড়ে চারধারে। ঠিক সেই আঘ্রান পাওয়া গেল সুরেন চন্দ্র মডার্ন হাই স্কুলের প্রেক্ষাগৃহে সাহিত্য আলপনা আয়োজিত নবান্ন কবিতা উৎসবে। কত রকমের কবিতা কবিদের কন্ঠে উচ্চারিত হল নব নব সৃষ্টির নির্যাস নিয়ে। কিছু কথা বলে  কবিতা পড়লেন সাহিত্যিক উমাপদ কর। শিলচর থেকে এসেছিলেন কবি  মৃদুলা ভট্টাচার্য শুনলাম তার কথা। কবি অরুন কুমার দে,কবি বীরেন্দ্র কৃষ্ণ বড়ুয়া, অংশুমান চক্রবর্তীর কবিতা পাঠ শুনে মুগ্ধ হলাম। বাচিক শিল্পী  সেলিম দুরানি বিশ্বাস সদ্যপ্রয়াত কবি অরুণ চক্রবর্তীর স্মরণে একটা অসাধারণ কবিতা পাঠ করলেন। বাচিক শিল্পী নন্দিনী লাহার অসাধারণ আবৃত্তির মধ্যে  ছিল ভাষাহীন এক শিশুর শব্দ দানবের শিকার হয়ে মৃত্যুর মর্মান্তিক কাহিনী। আমরা নিস্তব্ধ হয়ে শুনছিলাম কলকাতার শিল্পীর অসাধারণ পরিবেশনা। কলকাতার  বাচিক শিল্পী রচনা কর্মকার আমাদের খন্ডিত দেশের স্বাধীনতা লাভের সেই দুঃসহ দিনের কথা  তার অপূর্ব কন্ঠ বিন্যাসে পরিবেশন করলেন। কবিতার নাম স্বাধীনতার স্বপ্নভঙ্গ। আমাদের সবার সামনে দেশভাগের এক নিদারুণ স্বপ্নভঙ্গের ছবি ফুটে উঠলো তার কবিতায়। রাজীব ঘাঁটি বলেন,নবান্ন উৎসব প্রাণের উৎসব। এ উৎসব কবিদের মিলন মেলার উৎসব।

নবান্ন কবিতা উৎসবে বাঁকুড়া,পুরুলিয়া,বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানের চারজন কবিকে সম্বর্ধনা জানানো হল। এরা হলেন কবি কৃষ্ণ দুলাল চট্টোপাধ্যায়,সমরেশ মন্ডল,ডঃ সুভাস রায় ও পার্থ প্রতিম  আচার্য। দুর্গাপুর রত্ন পুরস্কার পেলেন দুর্গাপুরের দুই বর্ষীয়ান কবি গিরীন্দ্রনাথ চাকী ও ঝর্ণা মুখোপাধ্যায়। সঞ্চিতা সিনহার সঞ্চালনায় খেয়াতরী একটি কবিতা কোলাজ উপস্থাপনা করল।মুক্তধারার শিল্পীদের সম্বর্ধনা জানালেন দেবমাল্য  চ্যাটার্জি। এরপর সারাদিন ধরে চলতে থাকলো কবিদের কবিতা পাঠ ও বাচিক শিল্পীদের আবৃত্তি। ফিরে আসার মুখেই অনুকূল দক্ষিণ ত্রিপুরার চরকবাই গ্রামের বোহেমিয়ান কবি অভিক কুমার দের সাথে দেখা। যিনি তার কবিতার পশরা নিয়ে ঘুরে বেড়ান চারধারে ত্রিপুরার চরকবাই  এ  তার নাট্য সংস্থা মুহুরি নাট্য  সংস্থা। জড়িত আছেন সেখানকার সমভূমি সামাজিক সংস্থার সঙ্গে। গড়ে তুলেছেন একটি গ্রন্থাগার। ভালো লাগলো তার কথা শুনে যে সেখানে এখনো মানুষের বই পড়ার নেশা প্রচন্ড। বললেন, ত্রিপুরার মানুষের অভাব বেশী, নেই কোন শিল্প।  চাষবাস ও রাবার বাগান তার মাঝেই অভিক সংগ্রহ করেন তার কবিতার রসদ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments