Friday, November 22, 2024
Google search engine
Homeদক্ষিণবঙ্গকোজাগরী লক্ষ্মীকে স্মরণ করে ৭৭ বছর ধরে বর্ধমানের আনগুনা গ্রামে প্রকাশিত হয়ে...

কোজাগরী লক্ষ্মীকে স্মরণ করে ৭৭ বছর ধরে বর্ধমানের আনগুনা গ্রামে প্রকাশিত হয়ে আসছে হাতে লেখা সাহিত্য পত্রিকা

নিজস্ব প্রতিনিধি,বর্ধমানঃ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফোর জির পর এসে গিয়েছে ফাইভ জি প্রযুক্তি। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখনকার স্মার্ট ফোনের যুগে যাবতীয় লেখালেখিতেও লেগেছে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া। তবুও সেই পথে না গিয়ে প্রতি কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমায় হাতে লেখা সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করে আসছেন একদল সাহিত্য প্রেমী। তাও আবার এক আধ বছর ধরে নয়। সেই সুদূর ১৯৪৭ সাল থেকে  প্রকাশিত হয়ে আসছে হাতেলেখা ব্যতিক্রমী  ‘প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা’। পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার অখ্যাত গ্রাম আনগুনা গ্রামের এমন বিখ্যাত সাহিত্য  চর্চার খ্যাতি  ইতিমধ্যেই জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের  সাহিত্যিক মহলেও সাড়া ফেলে দিয়েছে। আনগুনা গ্রামের ‘প্রভাত স্মৃতি সংঘের’ সাহিত্য প্রেমী সদস্যদের চেষ্টায় প্রকাশিত হয়ে আসছে এই সাহিত্য পত্রিকা। নামি দামি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিবছর  ঝাঁ চকচকে শারদ সংখ্যার  প্রকাশ করে পাঠকদের নজর কাড়ে। কিন্তু আনগুনা গ্রামের এই হাতে লেখা সাহিত্য পত্রিকার কদর আজও নিজ গুণেই অটুট রয়েছে। বছর যত গড়াচ্ছে ততই বাংলা সাহিত্য দুনিয়ায় বেড়ে চলেছে “প্রভাত সাহিত্য পত্রিকার” পরিচিতি ও খ্যাতি। কেমন এই সাহিত্য পত্রিকা,যা নিয়ে সাহিত্যিক মহলে এত হইচই? উদোক্তারা জানিয়েছেন,আট  ইঞ্চি বাই বারো ইঞ্চি মাপের প্রভাত সাহিত্য পত্রিকার পৃষ্ঠা সংখ্যা থাকে  দু’শোরও বেশি। তাতে থাকে রং বেরং এর আঁকিবুকি।  নামজাদা কবি ও সাহিত্যিক থেকে শুরু করে একেবারে নবাগতদের হাতেলেখা কবিতা ও গল্পগুচ্ছ  স্থান পায় এই সাহিত্য পত্রিকায়। পত্রিকা প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত আনগুনা গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন,  “১৯৪৭ সালে আনগুনা গ্রামের কয়েকজন সাহিত্যপ্রেমী মানুষ প্রথম এই সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার পর থেকেই একই ধারায় এই সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে আসছে। এই সাহিত্য পত্রিকাই এখন আনগুনা গ্রামের ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ও বাহক হয়ে উঠেছে”। গ্রামবাসীরা আরো জানালেন, প্রতি বছর কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন সন্ধ্যায় গ্রামের মন্দিরে লক্ষ্মীদেবীকে সাক্ষী রেখে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয় ‘শারদীয়া প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা’। এবছরও শনিবার লক্ষীপুজোর দিন সন্ধ্যায় হাতে লেখা ‘প্রভাত’ সাহিত্য পত্রিকার ৭৭ তম সংখ্যা প্রকাশিত হয়। কাজী নজরুল ইসলাম,কালীদাস রায়,সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়,সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়,নবনিতা দেবসেন,সত্যজিৎ রায় প্রমুখ খ্যাতনামা লেখক ও সাহিত্যিকদের লেখনিতে  সম্বৃদ্ধ হয়েছে প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা।  লক্ষ্মী পুজোর অনেক আগে থেকেই শুরু হয়  প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশনার কাজ। প্রভাত সংঘের সম্পাদক উজ্জ্বল বারিক জানালেন,লেখক ও সাহিত্যিকরা যে লেখা পাঠান তা কোন ছাপাখানায় পাঠানো হয়না। কম্পিটারে টাইপ করেও লেখা হয় না। পত্রিকা প্রকাশনার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা নির্দিষ্ট মাপে কাটা আর্ট পেপারের উপর তা লেখেন। শুধু লেখাই নয়,শিল্প নৈপুন্যতার মাধ্যমে ওই লেখনিকে আরো দৃষ্টি নন্দন করে তোলা হয় রং ও তুলির আঁকিবুকিতে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments