Sunday, December 15, 2024
Google search engine
Homeদক্ষিণবঙ্গবাড়ির পাম্প চালিয়ে পুকুরের মাছ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছেন এক পুকুর...

বাড়ির পাম্প চালিয়ে পুকুরের মাছ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছেন এক পুকুর মালিক

নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: আইনি জটিলতার জেরে অচলাবস্থা একটি বড় পুকুরকে ঘিরে। বাড়ির পানীয়জলের পাম্প একটানা চালিয়ে কোনওরকমে পুকুরের মাছগুলি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পুকুরমালিক । কচুরিপানা ও আবর্জনা ভর্তি পুকুরের কালো জলে মাছগুলি খাবি খাচ্ছে। বড়বড় সাইজের রুই কাতলা মাছ পরিস্কার জলের পাইপের মুখের কাছে এসে জড়ো হচ্ছে। তাতেও রোজই মরে ভেসে উঠছে অসংখ্য মাছ। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে ‘সন্তোষ সায়ের’ নামে একটি পুকুর পাঁচবছর ধরে স্থানীয়দের একাংশের বাধার কারণে পরিষ্কার করতে পারেননি মালিকপক্ষ। এমনই অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত দত্ত ও তার পরিবার। আর আবর্জনা ভর্তি থাকায় পুকুরের মাছ মারা পড়ছে। শুধু পরিষ্কার করতে বাধাই নয়, সুশান্তবাবুদের অভিযোগ, পুকুর থেকে তাদের মাছও ধরতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে লক্ষাধিক টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এনিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন নিবেদেন করে কোনও বিহিত হয়নি বলে সুশান্তবাবু জানিয়েছেন। বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের পাশেই ভাতার বাজারে অবস্থিত বহু পুরানো আমলের পুকুর ‘সন্তোষ সায়ের।’ পুকুরের চারধারে রয়েছে বেশকিছু বসতবাড়ি ও দোকানপাট। সুশান্ত দত্তদের বাড়ি ও ব্যবসাও রয়েছে ‘সন্তোষ সায়েরের পাড়ে। সুশান্তবাবু জানান কুলচন্ডা মৌজায় ৯৯৩ দাগনম্বরে ১ একর ৭৩ শতক আয়তনের এই পুকুরটি তা পরিবারের কাছে বছর সাতেক আগে তিনি কিনেছিলেন। তারপর তাদের নামে রেকর্ড পরিবর্তনও হয়ে গিয়েছে। পুকুর কেনার পর ২০১৯ সালে সুশান্তবাবু পুকুরে মাছচাষ শুরু করেন। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হয় সমস্যা। জানা গিয়েছে সন্তোষ সায়ের নামে ওই পুকুরটি ভেষ্ট অর্থাৎ খাস দাবি করে আদালতে মামলা করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা অনন্ত সামন্ত সহ কয়েকজন। তারপর থেকেই জটিলতার সূত্রপাত। সুশান্ত দত্ত বলেন,” মামলা করার পর আমরা আইনি মোকাবিলা করি। তারপর মহামান্য আদালত থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় আমরাই পুকুরের বৈধ মালিক। পাশাপাশি পুকুরটিতে মাটি ফেলে কিছু অংশ বুজিয়ে দেওয়ার কারণে আমিও পাল্টা পিটিশন করি। মহামান্য আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে পুকুরটিকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ” সুশান্ত দত্তের অভিযোগ,” আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হলেও আমরা পুকুরের মাছ ধরতে পারছি না। এমনকি পুকুরটি আবর্জনায় ভর্তি হয়ে থাকলেও পরিষ্কার করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা পুকুর পরিষ্কার করার চেষ্টা করলেই কিছু লোকজন বাধা দিচ্ছে, হামলা করছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের কাছে গেলেও সুরাহা পাচ্ছি না। পুকুরে রোজই মাছ মারা পড়ছে। আবার চুরিও হয়ে যাচ্ছে।” এই অবস্থার মধ্যে পড়ে সুশান্তবাবুরা বাড়ির পাম্প চালিয়ে পুকুরের মাছ বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের কাছে চিঠি লিখেই যাচ্ছেন।
যারা সুশান্তবাবুদের পুকুরের মাছ ধরতে বা পরিষ্কার করতে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের মধ্যে অনন্ত সামন্তের দাবি,” ওই পুকুরটি ভেষ্ট সম্পত্তি। হাইকোর্টের নির্দেশ আছে ওই পুকুরে কেউ মাছ চাষ করতে বা ভোগদখল করতে পারবে না। আমরা কোনও জোরজবরদস্তি করিনি।” তবে সুশান্ত দত্ত পাল্টা দাবি করেছেন,” হাইকোর্টের নাম করে ‘জাল নির্দেশ নামা ‘ পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের কাছে দেখিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এর পিছনে কাজ করছে একটি চক্র। আমার এই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে রোজই কিছু মানুষ পুকুর থেকে মাছ চুরিও করে চলেছে। ” স্থানীয়দের একাংশের দাবি, পুকুরের মালিকানা নিয়ে সমস্যার নিষ্পত্তি যবেই হোক, আপাতত পুকুরটি পরিষ্কার করা হোক। কারণ এর ফলে আশপাশে দূষণ ছড়াচ্ছে, মশার উপদ্রব বাড়ছে।এই অচলাবস্থার অবসান চান তারা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments