সাথী প্রামানিক,পুরুলিয়াঃ মায়ের আগমন হয় বিসর্জন হয় না। হবে কী করে? বাড়ি নিয়ে গিয়ে সাজিয়ে রাখেন যে পর্যটকরা। পুরুলিয়ার গড়পঞ্চকোটে কোনও মণ্ডপ বা মন্দিরের নয় ‘দিদির দোকান’এ সেই মূর্তি প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে। কাঠের দুর্গা বেশি করে চোখ টানছে গড়পঞ্চকোট জুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায়। ঘরে তৈরি হচ্ছে কাঠের দুর্গা। এই হস্তশিল্প নজর টানছে সকলের। চাহিদামতো তা জোগানও দিচ্ছে গড়পঞ্চকোটের শিল্পী দিদি। উৎসবের মরশুমে লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে ব্যাপক। দম ফেলার ফুরসত নেই কাঠের দুর্গাপ্রতিমা শিল্পীর।আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে দাম একটু বেশি। জেলায় এখনও সেভাবে পর্যটনের মরশুম না আসায় ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতের মরশুমে এই কাঠের দুর্গার দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা দাম পান। আসলে এই কাঠের দুর্গাগুলি সোনাঝুরি গাছের। করাত কলে কেটে বাড়িতে নিয়ে এসে সূক্ষ্ম কাজে দুর্গার অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গড়পঞ্চকোটের মধ্যে রিঙ্কু কৈবর্ত নামে এক হস্তশিল্পীই শুধু এই কাজ করছেন। যা ‘দিদির দোকান’ নামে পরিচিত। তিনি জানান, “বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া থেকে আমি এই কাজ শিখেছি। সোনাঝুরি গাছ থেকে তৈরি কাঠের দুর্গার দাম ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা। তবে এখন একটু কমে বিক্রি করছি। এই কাজে অনেক পরিশ্রম। গামার গাছের কাঠ দিয়ে যে দুর্গা রয়েছে তার দাম ২,০০০ থেকে ২,৮০০ টাকা।পরিবারের সব সদস্য মিলে আমরা এই কাজ করছি। “একসাথে ৫টি করে এই কাজ করা হয়। এই কাজ করতে সময় লাগে ৭ দিন। অর্থাৎ একটা কাজে হাত দিলে পাঁচটারই একযোগে দুর্গার মুখ, হাত ফুটিয়ে তোলা হয়। আসলে এভাবে কাজ করলে সুবিধা হয়। ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা পুরুলিয়ায় সেভাবে কাঠের সাহায্যে কোন হস্তশিল্প নেই। রিঙ্কু কৈবর্ত বাঁকুড়ার প্রখ্যাত কাঠের শিল্পকলাকে পুরুলিয়ায় নিয়ে আসায় যেন আলাদাভাবে নজর কেড়েছে। বিশেষ করে মায়ের আগমনে কাঠের দুর্গা যেন বেশি করে চোখ টানছে গড়পঞ্চকোট জুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায়। তাই বিজয়ায় প্রতিমার বিসর্জন হয় জলাশয়ে। পর্যটকরা কাঠের দুর্গা বাড়িতে শোকেসে রেখে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করেন।
গড়পঞ্চকোটে মূর্তি বিসর্জন হয় না,বাড়ি নিয়ে সাজিয়ে রাখেন পর্যটকরা
RELATED ARTICLES