নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ গত বছর জলপাইগুড়িতে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছিল এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। সেই অভিজ্ঞতা থেকে এবার বাঁকুড়ার হাতি উপদ্রুত জঙ্গলমহলে মাধ্যমিক পরীক্ষাকে ঘিরে কড়া সতর্কতা বন দফতরের। সকাল থেকেই নিরাপত্তার মোড়কে বাঁকুড়ার হাতি উপদ্রুত এলাকা। প্রবাদ আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। বাঘের ভয় না থাকলেও বাঁকুড়ার জঙ্গল ঘেরা পাঁচটি ব্লকে এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৫৮ টি বুনো হাতি। সন্ধ্যে না হলেও এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর সময় অনেকটা এগিয়ে আসায় পরীক্ষার্থীরা যখন বাড়ি থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্যেশ্যে রওনা দিচ্ছে তখন ঘন কুয়াশায় ঢাকা চারিদিক। বাঁকুড়া জেলায় এমন শতাধিক গ্রাম রয়েছে যেখান থেকে হাতি উপদ্রুত জঙ্গলপথে পরীক্ষার্থীদের রওনা দিতে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। ঘন কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কম থাকায় ওই জঙ্গলপথে যে কোনো মূহুর্তে হাতির সামনে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে সেই আশঙ্কা আর অন্যদিকে গত বছর জলপাইগুড়ি জেলায় হাতির হানায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর ভয়াবহ স্মৃতিকে সামনে রেখে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করাই বন দফতরের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে গিয়ে যাতে কোনোভাবেই পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় না পড়ে সেজন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে বন দফতর। প্রথমত হাতিগুলির সঠিক লোকেশান সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে তা শেয়ার করা হচ্ছে স্থানীয় জঙ্গল ঘেরা এলাকার মানুষের সাথে। বেশ কিছু তুলনামূলক নিরাপদ জঙ্গলপথ নির্দিষ্ট করা হয়েছে যেগুলি দিয়ে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারবে । ওই পথগুলিতে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সময় মোতায়েন থাকছে হুলা পার্টি। নজরিদারির জন্য রাখা হয়েছে হাতি তাড়ানোর কাজে বিশেষ দক্ষ ঐরাবত ভ্যান। এরপরও কোনো ঝুঁকি নেয়নি বন দফতর। নিজেদের তত্বাবধানে পরীক্ষার্থীদের গাড়িতে করে বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যথা সময়ে পৌঁছে দেওয়া এবং পরীক্ষা শেষে ফের তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজও করছে বন দফতর। সব মিলিয়ে বন দফতরের কাছে এখন একটাই লক্ষ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করা। প্রথম দিন অবশ্য নির্বিঘ্নেই কেটেছে পরীক্ষার্থীদের।
জঙ্গলপথে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত নিরাপদ করতে পদক্ষেপ বন দফতরের
RELATED ARTICLES