সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ২৩ জুন: শাসক দলের ক্ষমতায় থাকা ঝালদা পুরসভার নবান্নে ডাক নেই। পৌর প্রধানদের নিয়ে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ওই পুরসভা। যার বর্তমান পুর প্রধান সুরেশ আগরওয়াল। দলেরই পুর প্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়কে কৌশলে সরিয়ে তিনিই এখন ক্ষমতায়। উন্নয়ন থমকে যাওয়া ওই পুরসভার বাসিন্দারা চাইছেন তাঁদের বঞ্চনা কাটিয়ে উঠুক। পরিষেবা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ দ্রুত রূপায়িত হোক। আর এই পরিস্থিতিতে ডাক নেই রাজ্যের এক মাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকা পুরসভা। সোমবার বিকেলে ওই বৈঠক হওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার এনিয়ে নির্দেশ জারি করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর | সেই নির্দেশ মোতাবেক বৈঠকটিতে থাকছেন না ঝালদার পৌর প্রধান এবং নির্বাহী আধিকারিক | এই নিয়ে ঝালদায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা |এই সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মৌন রয়েছে তৃণমূল। নবান্নে পৌরসভাগুলিকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে বাম পরিচালিত তাহেরপুর পৌরসভার পাশাপাশি ডাক মেলেনি ঝালদারও। টিপ্পনির ঢঙে কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, নদীয়ার তাহেরপুর তো না হয় বামেদের দখলে। কিন্তু ঝালদার পুরবোর্ড তো তৃণমূলের হাতে। প্রত্যাশিত ভাবেই এরমধ্যে সংকীর্ণ রাজনীতির ছায়া দেখছে বিরোধীরা।এবিষয়ে বিজেপির ঝালদা শহর সভাপতি বিজয় ভগত জানান, “ঝালদা পৌরসভা তৃণমূল পরিচালিত যেখানে পৌর প্রধান, উপ পৌর প্রধান তৃণমূলের রয়েছেন। ১২ জনের মধ্যে দশ জন কাউন্সিলার তৃণমূলের। কংগ্রেসের সমর্থনে চলছে পৌর বোর্ড। হয়তো তার জন্যেই ডাক পাইনি তবে প্রশাসনিক বৈঠকে ডাকা উচিত বলে আমরা মনে করে রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করি। কারণ আমরা মনে করি ঝালদা পৌরসভাকে আরও পিছনে নিয়ে গেল।” যদিও ডাক না পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও বিষয়টি নিয়ে যা বলার পৌর প্রধান বলবে বলে এড়িয়ে গেলেন ঝালদা পৌরসভার উপ পৌরপ্রধান সুদীপ কর্মকার। পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল বলেন, “আমি যেখানে রিপোর্ট পাঠানোর পাঠিয়ে দিয়েছি।” বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস কাউন্সিলর বিপ্লব কয়াল বলেন, “ঝালদা পৌরসভার কোন তথ্য হয়তো নেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। হয়তো উনার কাছে খবর নেই ঝালদা পৌরসভা তৃণমূলের। যে চিঠি পেয়েছি তাতে রাজ্যের দুই পৌরসভা তাহেরপুর ও ঝালদা পৌরসভা বাদ।তাহেরপুর বামেদের দখলে তাই বাদ দেওয়া হয়েছে হয়তো কিন্তু ঝালদা পৌরসভা তো তৃণমূলের এটা একটা লজ্জার ব্যাপার আমি মনে করি এখানে উন্নয়নে বাধা পড়বে বলে।” তবে সরকারের ওই সিদ্ধান্তের মধ্যে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন শহরের অনেকেই। এতে এলাকার উন্নয়নেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে শহরবাসীর মধ্যে। সেই আশঙ্কা অমূলক নয় বলে দাবি তৃণমূলেরই প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের। প্রসঙ্গত, অতি প্রাচীন ঝালদা শহরে সমস্যা অনেক। বাসস্ট্যান্ড নেই। গড়ে ওঠেনি বাইপাস রাস্তাও। নিকাশিও বেহাল। থমকে রয়েছে প্রস্তাবিত সুবর্ণরেখা জল প্রকল্পের কাজও। বৈঠকেই তো বাদ পড়ল ঝালদা। তারপরেও কি সুবর্ণরেখার জল ঝালদা পর্যন্ত পৌঁছাবে। প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন অনেকেই। সম্প্রতি পুরুলিয়া লোকসভার অন্তর্গত এই পুরসভার মানুষের সমর্থন পায় নি তৃণমূল। তাই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কোনও নেতাই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছে না। বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার লোক নেই।
শাসক দলের ক্ষমতায় থাকা ঝালদা পুরসভার নবান্নে ডাক নেই, সমালোচনার ঝড় রাজনৈতিক মহলে, মৌন তৃণমূল
RELATED ARTICLES