বিশেষ প্রতিনিধি,দুর্গাপুরঃ হস্টেলের রুম থেকে এক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি) কলেজে। মৃত ছাত্রের নাম অর্পন ঘোষ (২০)। মেকানিকাল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল অর্পন। বাড়ি হুগলী জেলার ব্যান্ডেলে। অর্পণের মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের ডিরেক্টরকে কাঠগড়ায় তুলে তাঁর ইস্তফার দাবি করেন পড়ুয়ারা। বাধ্য হয়ে রাতে ইস্তফা দেন ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবে। অর্পনের মৃত্যুর ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্রছাত্রীরা। বিকেল থেকে কলেজের ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবেকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। পরে ডিরেক্টরকে হেনস্থা করে টেনে হিঁচড়ে কলেজ গেটে নিয়ে আসে পড়ুয়ারা। ডিরেক্টরকে উদ্দেশ্য করে চোর স্লোগান দেয় ও তাঁর ইস্তফ দাবি করেন পড়ুয়ারা। কলেজ সূত্রে জানা গেছে রবিবার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ব্যাকলগের একটি পরীক্ষা ছিল দ্বিতীয় বর্ষের। অর্পন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘন্টা আগে খাতা জমা দিয়ে বেরিয়ে আসে। পরে তাঁর রুমমেটরা এসে দেখে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় অর্পনের দেহ ঝুলছে। সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে গান্ধী মোড় সংলগ্ন একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা অর্পনকে মৃত বলে ঘোষনা করে। অর্পনের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই ছাত্র ছাত্রীরা কলেজের ডিরেক্টরকে একটি অডিটোরিয়ামের মধ্যে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলাকালীন ডিরেক্টরকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়া হয়। অভিযোগ, তাঁকে শারীরিক হেনস্তা করা হয়।
সন্ধা সাড়ে সাতটা নাগাদ ডিরেক্টরকে কার্যত টেনে হিঁচড়ে অডিটোরিয়াম থেকে বের করে নিয়ে আসে পড়ুয়ারা। কলেজের মূল গেটে আসার পর ফের হেনস্থা করা হয় ডিরেক্টরকে। এরপর তাঁকে গেটের নিরাপত্তাকর্মীদের রুমে ঢুকিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়। পড়ুয়ারা তাঁর ইস্তফা দাবি করেন। ছাত্রছাত্রীদের দাবি ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবে তাদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। অধিকাংশ সেমেস্টারে পড়ুয়াদের ব্যাকলগ করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে পড়ুয়ারা চাপে পড়ে যাচ্ছে। একজন ছাত্র আত্মঘাতী হলো। ডিরেক্টর বলছেন, কলেজে মৃত্যু হতেই পারে। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্রছাত্রীরা। তখনই হেনস্থা করা হয় ডিরেক্টরকে। দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র সুমন মন্ডল বলেন, ” অর্পনের দেহ যখন নামানো হয় তখনও শ্বাস চলছিল। সময় মত অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় নি। পরীক্ষার সময় কলেজের পরিচয়পত্র নিয়ে যায় নি অর্পন। তারজন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষায় বসতে দিচ্ছিল না। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স নেওয়ার সময় পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। তাতে অনেকটা সময় নষ্ট হয়। কলেজের ডিরেক্টর নতুন নিয়ম চালু করছে প্রতিনিয়ত। তাতে পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ছে।” পড়ুয়ারা দাবি করেন, ডিরেক্টর ইস্তফা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস বয়কট করা হবে। যাকে কেন্দ্র করে এত গন্ডগোল সেই ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবে বলেন, “আমি ইস্তফা দিয়েছি। কিন্তু সেটা গ্রহন হয়েছে কিনা জানা নেই।”