Sunday, May 18, 2025
Google search engine
Homeদক্ষিণবঙ্গবিশ্ব হাসি দিবস উদযাপিত দুর্গাপুরে

বিশ্ব হাসি দিবস উদযাপিত দুর্গাপুরে

সংবাদদাতা,দুর্গাপুর: সিটি সেন্টারের চতুরঙ্গ ময়দানে নন কোম্পানি রিক্রিয়েশন ক্লাবের প্রভাতী হাসি যোগ প্রাণায়াম কেন্দ্রের পরিচালনায় বিশ্ব হাসি দিবস উদযাপিত হল। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত সিনিয়র সিটিজেনদের নিয়ে এই হাসি ও প্রাণায়াম ক্লাবটি এই বছর পঁচিশ বছরে পদার্পণ করলো। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক ডক্টর সৌরভ চ্যাটার্জি,দুর্গাপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাঞ্চন সিদ্দিকী, দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার এজিএম ফিজিওথেরাপিস্ট ডক্টর তপন বাদ্যকর, বিশিষ্ট পাওয়ার লিফ্টার সীমা দত্ত চ্যাটার্জি , অনিমেষ কান্তি মান্না জেলা গ্রামীন পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক সহ অন্যান্যরা।
হাসির ব্যায়ামের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ মদন কাটারিয়া মুম্বাই এর একটি স্থানীয় পার্কে তার স্ত্রী মাধুরী কাটারিয়া ও তিনজন বন্ধুকে নিয়ে ১৯৯৫ সালে প্রথম হাসির ব্যায়াম শুরু করেন।  এরপর হাসির ব্যায়াম জনপ্রিয় হতে থাকে। প্রথমে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাঙ্গালুরুতে। এরপর সারা দেশে। হাসির ব্যায়ামের উপকারিতা উপলব্ধি করতে পেরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে হাসির ব্যায়াম। ডঃ মদন কাটারিয়া ১৯৯৮ সালের ১০ মে প্রথম বিশ্ব হাস্য দিবস পালন করেন। এরপর প্রতি বছর মে মাসের প্রথম রবিবার বিশ্ব হাস্য দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১২০ টির ও বেশি দেশে নিয়মিত হাসির ব্যায়াম করেন অসংখ্য লাফিং ক্লাবের সদস্যরা। কলকাতায় ১৯৯৬ সালে প্রথম ঢাকুরিয়া লেকের সাফারি পার্কে শ্রী এন এল দাগা হাসির ব্যায়াম শেখাতে শুরু করেন। তিনি আমেদাবাদ গিয়ে এই হাসির সন্ধান পান। এদিনের এই হাসি দিবসের অনুষ্ঠানে ১০০ জনেরও বেশি পুরুষ ও মহিলা অংশ নেন। আমাদের মনের যাবতীয় সংশয়, উদ্বেগ, টেনশন ও বিষন্নতা দূর করার জন্য দরকার নির্মল হাসি। হাসলে মানুষের শরীরের কিছু নিউরো ট্রান্সমিটার বেরোয়। বিজ্ঞানসম্মতভাবে দেখা গেছে এতে শরীর শিথিল হয় । তার ফলে টেনশন কমে যায়।প্রাণ খোলা হাসি হাসতে পারলে টেনশন মুক্ত হয়ে যাওয়ায় তা হৃদযন্ত্রের পক্ষে উপকারী ভূমিকা নেয়। উচ্চ রক্তচাপ, ব্লাড সুগার ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার ক্ষেত্রে প্রাণ খোলা হাসি দারুন দাওয়াই। মনস্তত্ত্ব ও মস্তিষ্ক কেন্দ্রিক গবেষণা স্বীকার করেছে হাসি আমাদের সহ্য শক্তি বাড়ায়। আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। হাসি আমাদের বুদ্ধি বাড়ায়। হাসি আমাদের স্মরণশক্তি বাড়ায়।আমেরিকার ইউনিভার্সিটি স্টেটস অফ মেরিল্যান্ড এর বিজ্ঞানী মাইকেল মিলানের তত্ত্বাবধানে এক গবেষণায় দেখা গেছে হাসি মানুষকে দীর্ঘ ও জীবন গবেষণাটি দেখাচ্ছে নিয়মমাফিক হাসিতে ২২ শতাংশ পর্যন্ত রক্ত চলাচল বাড়ে শরীরে। এমনকি হৃদযন্ত্রের ধমনীর ব্লকেজ বা অ্যাথেরোস্ক্রোরোসিস সেরে যায় প্রাণ খোলা হাসি হাসলে। হাসি আমাদের রক্তচাপ কমায়। স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে দিয়ে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। হাসিতে ফুসফুস ও শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকে এর ফলে শ্বাসক্রিয়াকে  উন্নত করে এবং ফুসফুসকে সক্রিয় রাখে । পেটের পেশিকে শক্তিশালী করে ফলে পেটে মেদ জমে না ও পেটের অভ্যন্তরীণ সমস্যা দূর হয়।শরীরে এন্ড্রোফিন এর মাত্রা বাড়ায় যা পেন কিলার এর কাজ করে।শরীরের রক্ত চলাচল বাড়ে।মানসিক চাপ দূর করে। ও বিভিন্ন রকম হাসির ব্যায়াম প্রদর্শন করেন। ডঃ সৌরভ চ্যাটার্জী বলেন শরীর সুস্থ রাখতে হাসির ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন আমাদের জীবনে দুটো বাক্স আছে। একটা বাক্সে দুঃখ আরেকটি বক্সে দুঃখের বাক্সকে বন্ধ করে আনন্দের বাক্সকে খুলে মন প্রাণ হাসিও আনন্দে ভরিয়ে দিলে আমরা সুস্থ থাকবো ভালো থাকবো। হাসি মনকে ভালো করে দেয়। রোগমুক্ত করে। কাঞ্চন সিদ্দিকী বলেন একবার প্রাণ খুলে হাসলে চল্লিশ মিনিট মন প্রাণ তাজা থাকে। হাসির ব্যায়ামের প্রশিক্ষক প্রণয় রায় বলেন প্রাণ খোলা হাসি ফুসফুস ও শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকে। উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস হৃদযন্তের সমস্যা থাইরয়েড ও টনসিলের সমস্যা হাঁপানি ইত্যাদি রোগ নিয়ন্ত্রণ করে। হাসি টেনশন মুক্ত করে। শ্রী রায় গত ২৫ বছর ধরে দুর্গাপুরের বিভিন্ন ক্লাবে হাসির ব্যায়াম এর এর প্রশিক্ষণ দেন। এদিন হাসির ব্যায়ামে নন কোম্পানি রিক্রিয়েশন ক্লাবের প্রভাতী হাসি ও প্রাণায়ম ক্লাবের সদস্যরা ছাড়াও বিদ্যাপতি পতঞ্জলি যোগ সেন্টার ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েনের সদস্যরা ও অংশ নেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments