নিজস্ব প্রতিনিধি,বর্ধমানঃ চিঠি কাণ্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সরাসরি হাসপাতালে হাজির হলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি দল। মঙ্গলবারের ঘটনাটি হালকা ভাবে যে নিচ্ছে না প্রশাসন তা পরিস্কার। এখানে উল্লেখ্য, মঙ্গলবার একটি কার্তুজে গায়ে চিঠি জড়িয়ে মাওবাদী নাম দিয়ে এক চিকিৎসককে হুমকি দেওয়া হয় পূর্ব বর্ধমানের ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে। পাশাপাশি ওই চিকিৎসকে আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। মঙ্গলবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসক অর্পণা মুখার্জী মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ হাসপাতালের বহিঃবিভাগে দরজা খুলে ঢুকতেই তার নজরে আসে দরজার সামনে একটি চিঠি পড়ে আছে। চিঠি খুলে তিনি দেখেন,তাতে লাল কালি দিয়ে লেখা আছে মাওবাদী নামে আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। না হলে গোটা পরিবারের প্রাণ সংশয়ের হুমকি দেওয়া হয়েছে। টাকা দিতে হবে ওই জায়গাতেই। চিঠির নীচে প্রেরক হিসেবে তপন মাহাতর নাম লেখা আছে। এই রকম চিঠি পেয়ে তিনি প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আকস্মিকতা কাটিয়ে তিনি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি সহ গোটা বিষয়টি জানান। তারপরেই ভাতার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় ভাতার থানায়। চিঠিটি দরজার নীচ দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে চিঠির সঙ্গে থাকা কার্তুজটি সক্রিয়। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে। বুধবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম ও সহকারী স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী যান ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে তারা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিত্রা ভৌমিককে নিয়ে বৈঠক করেন। হাসপাতালে উপস্থিত হন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীও। মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক জানান, ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স বা কর্মীরা সকলেই ভয়ে ও আতঙ্কে আছেন। এই চিঠি কারা দিয়েছে তা পুলিশই বলতে পারবে। তিনি মঙ্গলবারই বিকেলে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা শাসককে জানিয়েছেন, জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনেও। তিনি বলেন, দন্ত চিকিৎসক অর্পণা মুখার্জি বহিঃবিভাগে রুগী দেখার জন্য রুমে ঢুকতেই এই হুমকি চিঠিটি তার চোখে পড়ে। চিকিৎসক অর্পণা মুখার্জি চিঠি পাওয়ার পরই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানান। পাশাপাশি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলা হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য। পাশাপাশি হাসপাতালের নিরাপত্তার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এমনিতেই হাসপাতালে সব সময়ে সিভিক ভলেন্টিয়ার থাকেন। এখন একজন পুলিশ অফিসারও থাকবেন। চিকিৎসক ও কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে ভিজিটিং কার্ড চালুর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। তবে বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী বলেন, এসব ফালতু চিঠি। এখানে মাওবাদীদের কোন সংগঠন নেই। তবে এই বিষয়ে দন্ত চিকিৎসক অপর্ণা মুখার্জি কিছু বলতে অস্বীকার করেন।
কার্তুজের সঙ্গে মাওবাদী চিঠি,জোর তৎপরতা হাসপাতালে
RELATED ARTICLES