নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুর, ২৩ সেপ্টেম্বর: কিছুদিন আগেই রাজ্যে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে এমনিতেই বহু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছিল। তারপর দামোদর ও পাঞ্চেত থেকে বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে রাজ্যে একাধিক এলাকায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। ঘর বাড়ি চাষ জমি জলে ডুবে গেছে। এই পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি কে দায়ী করে এই বন্যাকে ম্যান মেড বলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে তিনি বন্যা কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে বের হয়েছেন। সোমবার তিনি পূর্ব বর্ধমান সফরে আসেন। সেখানে তিনি প্রশাসনিক বৈঠকও করেন। তারপরই সড়ক পথে তিনি চলে আসেন দুর্গাপুরে। এখানে তিনি দুর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শন করেন এবং নিকটবর্তী সীতারামপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। টানা বৃষ্টি আর দামোদরের জলে এলাকাটি ডুবে যাওয়ায় বহু মানুষ নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছেন। তিনি সেখানকার লোকজনদের সঙ্গে এদিন কথা বলেন এবং তাদের ত্রিপল সহ ত্রাণ সামগ্রী প্রদান করেন। এরপর তিনি এখানকার যুব আবাসে আসেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ফের একবার এই বন্যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবার ডিভিসি কে বেসরকারি হাতে বিক্রি করতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ডিভিসি কোন কাজ করেনা। ব্যারাজ ড্রেজিং করা হয় না। আগে যেখানে ৪ লক্ষ কিউসেক টন জল ধরে রাখার ক্ষমতা ছিলো, এখন তা ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। ঠিক যে ভাবে ইসিএলকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে, সেভাবেই ডিভিসিকে বিক্রির চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার কারণে দামোদরের নিম্ন অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, সীতারামপুর, মানা সহ বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকের নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম সপ্তাহখানেক আগে ডুবে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, পাণ্ডবেশ্বর এর বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় সহ বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিভিন্ন পদাধিকারীরা, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সমস্ত আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। মমতা বলেন, ‘দেখলাম আকাশ কালো করে আছে। আবার দু’তিনদিন বৃষ্টি হবে। তখন আবার জল ছাড়বে। তখন কাকে ডোবাবে কে জানে? বিপদ আসছে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে বলছি। জেলা প্রশাসনকে বলেছি রিলিফ সেন্টারের জায়গা খুঁজে রাখতে। বন্যা দুর্গতদের প্রশাসন রিলিফ দিচ্ছে। পুলিশের তরফেও রিলিফ দেওয়া হচ্ছে। দলের তরফেও যতটা করা যায়, তা করা হচ্ছে। আমি ইতিমধ্যেই সব তালিকা করতে বলেছি। রাস্তা ও বাড়ির তালিকা করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে যে বাড়ি দেওয়া হবে, তার তালিকার সঙ্গে এইসব মানুষদের তালিকা মিলিয়ে নিতে বলেছি।‘ মঙ্গলবার বীরভূম সফর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন তিনি দুর্গাপুরে সার্কিট হাউসে রাত্রিবাস করে আগামীকাল বীরভূম যাবেন বলে জানা গেছে।
দুর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শন করে বন্যার জন্য ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী
RELATED ARTICLES